নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিনেটের বার্ষিক অধিবেশন। যেখানে উপস্থাপন করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেট। এদিকে ভবনের বাইরেই চাকরিকাল ৬৫ বছর পর্যন্ত করার দাবিতে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের ভেতরে ও বাইরে এমন চিত্র দেখা যায়।

ঢাবি কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের এই বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৬৫ বছর পূর্তিতে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের নির্দেশনা আছে। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাবি শিক্ষা, গবেষণা এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরাও সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখাসহ সুষ্ঠুভাবে দায়-দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। একই পরিবারের সদস্য হয়েও আমরা ৬৫ বছর বয়সে অবসর গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩-এর ১০নং স্ট্যাটিউস-এর ১৯নং ধারায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আদেশের ৩৯ (১৬) ধারায় Made, amended এবং repealed করার পূর্ণ ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৬৫ বছর বয়সে অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি কোনো বাধা নেই।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর পর্যন্ত করাসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এন্ড অব দ্যা সেশনে অবসরে যাওয়ার বিষয়টি বহাল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

এদিকে সিনেটের চেয়ারম্যান ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সশরীরে চলছে সিনেটের বার্ষিক অধিবেশন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বাজেট উপস্থাপন এবং আলোচনার পর ঢাবির ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত হবে।

এর আগে গত ২১ জুন ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। ওইদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এ বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিন্ডিকেট সূত্রে জানা যায়, এবারের বাজেটে ২৬৪ কোটি টাকা শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ২২৪ কোটি টাকা ভাতা, পণ্য ও সেবায় খাতে ১৬৮ কোটি টাকা, পেনশন বাবদ ১২২ কোটি টাকা, গবেষণা মঞ্জুরি খাতে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (বিমক) অনুদান ৬৯৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৮৩ শতাংশ

এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি বাজেট বরাদ্দ হয়েছে বেতন-ভাতা খাতে। শুধু বেতন-ভাতা খাতেই খরচ হবে ৪৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। যা বাজেটের ৫৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। সবচেয়ে কম বরাদ্দ হয়েছে গবেষণা খাতে। তবে আকার বেড়েছে। গত অর্থবছরে (২০২০-২১) গবেষণা খাতে (মঞ্জুরি) বরাদ্দ ছিল নয় কোটি ৫০ লাখ টাকা, নতুন বাজেটে যা ১১ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এইচআর/এমএইচএস