বাজেটে সংস্কৃতির জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবি
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতির জন্য বরাদ্দ হওয়া ০.০৯৭ শতাংশ পরিবর্তন করে কমপক্ষে ১ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
মঙ্গলবার (৮ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি ভবনের নীচতলায় সংগঠনটির এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।
বিজ্ঞাপন
লিখিত বক্তব্যে কুদ্দুস বলেন- মানবিক, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিবাদী সমাজ নির্মাণে মানুষের চিন্তায় এবং মননে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দেশব্যাপী একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ। এই সাংস্কৃতিক জাগরণ শুধুমাত্র সংস্কৃতি কর্মীদের শিল্পের প্রতি ভালোবাসা এবং একক প্রচেষ্টায় বেশি দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের বিনিয়োগ অপরিহার্য। নামে মাত্র অনুদান দিয়ে সর্বগ্রাসী সংকট থেকে জাতিকে কখনো রক্ষা করা যাবে না।
১ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ কথা ভুললে চলবে না যে, বাংলাদেশের মূলভিত্তি হলো সংস্কৃতি। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সংস্কৃতি নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। আমরা তাই প্রস্তাব করছি, চলতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতির জন্য ০.০৯৭ পরিবর্তন করে কমপক্ষে ১ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হোক। এতে দেশের মঙ্গল, জাতির মঙ্গল, মানুষের অশেষ কল্যাণ সাধিত হবে।
সংস্কৃতির অঙ্গনে উন্নতি সাধনে সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি নয় দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-
১.প্রত্যেক উপজেলায় সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে হবে। সেইসঙ্গে একটি উন্মুক্ত মঞ্চের পাশাপাশি প্রত্যেক উপজেলায় একজন প্রথম শ্রেণির শিল্পকলা অফিসার এবং সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি ও চারুকলার স্থায়ী প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
২. প্রত্যেক জেলায় আধুনিক মিলনায়তন ও মুক্তমঞ্চ নির্মাণ করতে হবে। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি ও চারুকলার স্থায়ী প্রশিক্ষক দিতে হবে।
৩. রাজধানীসহ প্রত্যেক জেলায় সরকারি উদ্যোগে একটি করে যাত্রা প্যান্ডেল নির্মাণ করতে হবে।
৪. ঢাকা শহরে প্রতি ৫ লাখ লোকের জন্য একটি আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণের দাবি জানাই।
৫. অসচ্ছল শিল্পীকে মাসে কমপক্ষে ১০,০০০ টাকা সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৬. সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে সরকারি বাৎসরিক অনুদান এক লাখ টাকা প্রদান করতে হবে।
৭. জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশন এবং জাতীয় পর্যায়ের অবাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎসব আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৮. করোনা সংক্রমণের কারণে দেশব্যাপী বহু সংস্কৃতি কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাই সংস্কৃতি কর্মীদের বিনা সুদে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করতে হবে।
৯. প্রত্যেক জেলায় চারুকলা প্রদর্শনীর জন্য আর্ট গ্যালারি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের জন্য মিনি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি জুনায়েদ চৌধুরী, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সালা উদ্দিন বাদল, জাতীয় কবিতা পরিষদ আসলাম সানী, পথ নাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর, শিশু সংগঠন ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ, বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী পরিষদের সদস্য ফারহানা চৌধুরী বেবিসহ আরও অনেকই।
এইচআর/এমএইচএস