হামলা পরবর্তী সমাবেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে রুখে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্রদল নেতারা। মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে এক সমাবেশে তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দাবি, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষির্কী উপলক্ষে শিক্ষা ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি পালনের জন্য নেতাকর্মীরা টিএসসিতে জড়ো হতে থাকেন। সেখানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ‘অতর্কিত হামলা’ চালায়। এতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনসহ ১৫-২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

এ হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি গেট থেকে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে সমাবেশ করে ছাত্রদল। সেখানেই তারা হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন।

সমাবেশে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, টিএসসিতে ছাত্রলীগ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিচার দাবি করছি।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, এ ক্যাম্পাস (ঢাবি) শুধুমাত্র ছাত্রলীগের নয়, এটা আমাদেরও ক্যাম্পাস। ছাত্রদলের ওপর হামলা চালালে ছাড় দেব না। এই ক্যাম্পাসে আর একবিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না, ছাত্রলীগকে রুখে দেওয়া হবে।

সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর যেভাবে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে এরা কখনও ছাত্র সংগঠন হতে পারে না। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর জন্য ছাত্রলীগকে উত্তম জবাব দেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে টিএসসিতে শিক্ষা ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি ছিল। আমাদের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে অবস্থান করলে ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমান পিকুলের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয় জন ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। আমাদের খাদ্য ও শিক্ষা সামগ্রীগুলোরও হদিস নেই।

তিনি বলেন, আহতরা হলেন- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আখতার হোসেন, জহির উদ্দিন আহমেদ, আবু জাফর, শাহজাহান শাওন, মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল, মিয়া মো. রাসেল, আরিফুল ইসলাম; ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য মো. তরিকুল ইসলাম তারিক, রিয়াজ আনোয়ার হোসেন, ফারহান আরিফ, রাজু আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান খান, সূর্যসেন হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান। আরও কয়েকজনের নাম এখনই সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

এদিকে হামলার ঘটনা অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা কয়েকদিন ধরে দেখতে পাচ্ছি, সামরিক শাসক, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী মেজর জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্রে করে ছাত্রদল রীতিমতো ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস শুরু করেছে। ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, উপদলীয় কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে। এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আজ তারা নিজেদের মধ্যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর একটি আঘাত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। পূর্বানুমিত ছাড়া তাদের (ছাত্রদল) এ ধরনের অপকর্ম এবং স্বেচ্ছাচারী কাজের দায় বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না। তাদেরই নিতে হবে।

এইচআর/এফআর