আবরার হত্যায় বহিষ্কৃত বিটুর সঙ্গে ক্লাস করবে না শিক্ষার্থীরা
আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে আজীবন বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বিটু সম্প্রতি আদালতের স্টে অর্ডার নিয়ে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেন। অভিযুক্ত বিটুর সঙ্গে কোনো শর্তেই ক্লাস করবে না বলে জানিয়েছেন তার বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বিটুর ক্লাসে ফেরত আসার প্রতিবাদে বুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, গত ২২ মে বিটু কেমিকৌশল লেভেল-৩ টার্ম-১ এর একটি কোর্সের অনলাইন ক্লাসে অংশ নেন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়।
এরপর শিক্ষার্থীরা আশিকুল ইসলাম বিটুর কোর্স রেজিস্ট্রেশন বাতিল এবং আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত কেউ যাতে আর একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। ২৯ মের মধ্যে তাদের এ দাবি কার্যকর না হলে ৩০ মে থেকে সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ১৭ ব্যাচের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আহমেদ মোয়াজ। তিনি বলেন, আশিকুল ইসলাম বিটুর সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে কোনো শর্তেই আমরা ইচ্ছুক নয় – এ মর্মে বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি উত্থাপন করেছি। প্রশাসন দ্রুত সময়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে, আশিকুল ইসলাম বিটুর কোর্স রেজিস্ট্রেশন এখনও সম্পন্ন হয়নি তাই সে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। একইসঙ্গে কোর্সগুলোয় তার অন্তর্ভুক্তি বাতিল করা হয়েছে। বুয়েট প্রশাসন আমাদের এই মর্মে আশ্বাস প্রদান করেছে যে, অবিলম্বে আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
মোয়াজ বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ২৯ মের মধ্যে বুয়েট প্রশাসন আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। কোনো কারণে এই সময়ের মধ্যে আপিল করতে না পারলে, আপিল করার প্রতিশ্রুতি একটি গ্রহণযোগ্য সময়সীমাসহ অফিশিয়াল বিবৃতি অন্তর্ভুক্ত করবেন। এ দুইটির যেকোনো একটি কার্যকরের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পুনর্বিবেচনা করে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবো।
জানা যায়, গত ২২ মে কেমিকৌশল ১৭ ব্যাচের একটি কোর্সের ক্লাসে বিটুকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি আশিকুল ইসলাম বিটু তার বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পান। একইসঙ্গে বুয়েটে তার একাডেমিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেন। পরে ৪ এপ্রিল বুয়েটে প্রশাসন আবেদনের সাপেক্ষে আশিকুল ইসলাম বিটুকে ক্লাস করার অনুমতি প্রদান করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও বুয়েটের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার প্ল্যাটফর্ম মাইক্রোসফট টিমসের সংশ্লিষ্ট কোর্সগুলোয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে তাকে কেমিকৌশল ১৭ ব্যাচের সঙ্গে লেভেল-৩ টার্ম-১ এর অন্তত ৪টি কোর্সে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
এইচআর/এসকেডি