৪৩ তম বিসিএসের দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব নিরপরাধ প্রার্থীদের গেজেটভুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা চাই না কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী শাস্তি ভোগ করুক। যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু কোনো নিরপরাধ যেন গেজেট থেকে বাদ না পড়ে। কারো আত্মীয় স্বজন ভিন্ন মতাদর্শ থাকতেই পারে, কিন্তু তার দায়ভার একজন শিক্ষার্থী কেন ভোগ করবে? বিসিএসে উত্তীর্ণ হতে কত পরিশ্রম করতে হয় তা শুধু মাত্র সেই শিক্ষার্থীই জানে।

এ সময় যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকার দালিলিক প্রমাণ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার দালিলিক প্রমাণ রয়েছে ব্যতীত বাকি সব প্রার্থীকে প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করে আগামী ১৫ জানুয়ারি বাকি ১৮৯৬ জনের সঙ্গে একযোগে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন মুন্না বলেন,  চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে ন্যায্যতার প্রশ্নে আপোষ নয়। আমাদের বক্তব্য নিরপরাধ কেউ ভুক্তভোগী না হোক। যারা ক্যাডার সার্ভিসকে কলুষিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। বিদ্যমান সংকটে চাকুরির পরীক্ষা গুলো দ্রুততর করার অনুরোধ রইলো।

আরেক শিক্ষার্থী রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়ে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের যে নির্দোষ ভাইয়ের চার পাঁচ বছর রক্ত পানি করে পড়াশোনা করে নিজ যোগ্যতায় এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে তাদেরকে যেন বাদ দেওয়া না হয়। যদি এমন হয়, বৈষম্য করা হয় ছাত্র-জনতা বসে থাকবে না।

বাদ পড়ার বিষয়ে আক্ষেপ জানিয়ে বিসিএসে উত্তীর্ণ জবি শিক্ষার্থী মো. রায়হান কবির বলেন, আমি আমার জীবনে কোনো রাজনৈতিক দল ও তাদের কোনো প্রকার কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না এবং আমার বিরুদ্ধে চলমান কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। তাহলে আমি কেন বাদ পড়লাম? বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে কত পরিশ্রম কত সাধনা কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তা শুধু একজন পরীক্ষার্থীই জানে। তাই অবিলম্বে ভেরিফিকেশন এর নামে একজন নিরীহ নিরপরাধ প্রার্থীকে যেন অন্যায়ভাবে বিসিএস থেকে দেওয়া না হয় এবং এই অপচর্চার প্রথা চিরতরে মুছে ফেলা হয়।

প্রসঙ্গত, ৪৩তম বিসিএসে নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে গত ৩০ ডিসেম্বর। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েন ১৬৮ প্রার্থী। এর আগে ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়েছিলেন ৯৯ জন। সব মিলিয়ে ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়েন মোট ২৬৭ জন। যার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত পাঁচজন রয়েছেন।

এমএল/এআইএস