চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে ছিনতাইকারীর হামলায় দুই শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৪ দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় শহিদ মিনারের সামনে প্রথমে মানববন্ধন করেন তারা। পরে শহিদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে ফটক ও শাটল ট্রেন আটকে দেন। এতে ওইদিন দুপুর ১টা ও ২টার শাটল ট্রেন ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেনি।

শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবিগুলো হলো :

১. দুর্বৃত্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।

২. শাটলে শুধু মাত্র শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে ও বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ স্থায়ীভাবে রোধ করতে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া।

৩. শাটলের প্রতিটি বগিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কমপক্ষে একজন করে পুলিশ মোতায়েন করা।

৪. ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করা।

আন্দোলনরত ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ণব সরকার দীপ্ত বলেন, গতকাল আমাদের বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থী শাটলে ছিনতাইকারীদের দ্বারা নির্মমভাবে আহত হয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মানববন্ধন করেছি। যেহেতু শাটল ট্রেন অনিরাপদ, সেহেতু আমরা শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেব। সেইসঙ্গে প্রশাসনের কাছে আমাদের ৪ দফা দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের আলোচনা হবে। সেখানে দাবি পূরণের ব্যাপারে প্রশাসন আমাদেরকে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন। যদি ওনারা আমাদের দাবি পূরণ না করেন, তাহলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। তিনি তাদেরকে জানান, আমরা আহত হওয়ার কথা শুনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পাঠিয়েছি। তারা ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে আসলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতালে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমরা তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি । তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হয়েছে। আমরা শাটলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ওই এলাকার ডিআইজির সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা তাদেরকে ছিনতাই ও হামলার বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা দ্রুত তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন এবং গতরাতে অভিযান চালিয়ে ৫ থেকে ৬ জন ছিনতাইকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন। তাদেরকে ভুক্তভোগীর নিকট নিয়ে যাওয়া হবে। ভুক্তভোগী চিনতে পারলে আটকৃতদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এর বাইরে যদি কেউ হয়ে থাকে, তাহলে তাদের ধরতে পুলিশ তৎপরতা চালাবে।

আতিকুর রহমান/এআইএস