রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর রুয়েটের মূল ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে ভদ্রা মোড়ের দিকে যান তারা।

এর আগে, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী পদ্মা আবাসিক এলাকা-সংলগ্ন হজোর মোড়ে দোকানির সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে আধা ঘণ্টার মতো থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তালাইমারী মোড় হয়ে ভদ্রা মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে চারটি রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। ভদ্রা মোড়ে শিক্ষার্থীরা আধা ঘণ্টা অবস্থান করে বেলা দেড়টার দিকে অবরোধ তুলে নেন।

অবরোধকালে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই স্থানীয়দের কথাকাটাকাটি হয়। সামান্য কিছু হলেই স্থানীয় বাসিন্দারা শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলেন। গতকাল তাদের শিক্ষকেরা হজোর মোড়ে কথা বলতে যান। তখন দ্বিতীয় দফায় হামলা করা হয়। এ ঘটনায় এজাহারে থাকা দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।

ভদ্রা মোড়ে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তানজিমুল হক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন। দ্রুত পাঁচ দফা না মানা হলে আবারও তারা রাস্তা অবরোধ করবেন বলে জানান।

তাদের দাবিগুলো হলো—হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে দ্রুততম সময়ে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। হামলার নেপথ্যের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করতে হবে। রাজশাহীর আবাসিক এলাকাগুলো অস্ত্র, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। মোন্নাফের মোড়সহ রুয়েটের আশপাশে এসব সমস্যার প্রকোপ আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে, রুয়েট ও এর আশপাশের এলাকাগুলোর চুরি ও ছিনতাইকারীমুক্ত করতে হবে। চুরিকৃত মালামাল ফেরত ও জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। রুয়েটের অভ্যন্তরে (টং, সেন্ট্রাল ফিল্ডসহ অন্যান্য জায়গায়) বহিরাগত প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ বিল্লাহ রিফাত গতকালের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং হামলায় দোষীদের বিচারের পাশাপাশি রুয়েট ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের পদ্মা আবাসিক এলাকায় স্থানীয় দোকানদারের সঙ্গে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে রুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। যাদের মধ্যে ছয়জন গুরুতর আহত ও তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তৎক্ষণাৎ পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে এবং রুয়েট প্রশাসন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ্য ও ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে।

জুবায়ের জিসান/এএমকে