জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব পাশে শিক্ষার্থীদের মারামারির ছবি ও ভিডিও ধারণ করায় এক সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ দৈনিক কালের কণ্ঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারামারি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ধূপখোলা মাঠে। পরে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে ফের মারামারি বাঁধে। এ ঘটনার ভিডিও করতে গেলে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ওই সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা করেন এবং ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এর আগে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে গণিত বিভাগের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ায় ইংরেজি বিভাগ আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। পরে গণিত বিভাগের আরও শিক্ষার্থী এসে ইংরেজি বিভাগের সঙ্গে মারামারিতে জড়ায়। এসময় ধূপখোলা মাঠে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসময় উভয় বিভাগের ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

এদিকে ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ মারামারির ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে গেলে প্রথম বাধা দেন শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। এসময় অজ্ঞাত আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ বলেন, আমি ভাস্কর্য চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখতে পাই ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব দিকে মারামারি হচ্ছে। আমি ফোন দিয়ে ভিডিও করতে শুরু করি। এ সময় চার-পাঁচ জন কেন আমি ভিডিও করছি জিজ্ঞেস করে। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিই।

পরে তারা বলেন, তুই কে? তুই কীসের সাংবাদিক! ভিডিও কেন করবি? বলে ফোন ছিনিয়ে নিতে যায়। বাধা দিলে তাদের কয়েকজন আমার বুকে আঘাত করে। পরে আমি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা সরে যায়। এসময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সবাইকে সরে যেতে বলেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন বলেন, আমি সেখানে হামলা ঠেকিয়েছি। আমি হাত দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছিলাম। সেখানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সেক্রেটারি সুজন মোল্লা বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে বোঝার উপায় নেই কারা গায়ে হাত তুলেছে।  আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। আমাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। করতেও চাই না।

জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। শুধু সাংবাদিক নয়, কোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হলেও আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। কে হামলা করেছে, তার পরিচয় শনাক্ত করা গেলে আমরা সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।

এমএল/এসএসএইচ