বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা ও শিক্ষার্থীদের নিপীড়নের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮১ জন অভিযুক্ত হয়েছেন। এরমধ্যে শিক্ষক দুইজন, কর্মকর্তা-কর্মচারী সাতজন ও শিক্ষার্থী ৭২ জন।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট মিটিং শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ও শিক্ষার্থী নিপীড়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক, সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৭২ জন শিক্ষার্থী অভিযুক্ত হয়েছেন।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ।

যে সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এ হত্যাকাণ্ড ও শিক্ষার্থী নিপীড়নে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা আচরণ বিধি ২০১৮, মোতাবেক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যে সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের ছুটি মঞ্জুর না করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে সকল শিক্ষার্থী ছাত্রত্ব শেষ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হবে। যাদের ছাত্রত্ব আছে তাদের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় বেরোবির ফটকের সামনে নিহত হন আবু সাঈদ। আন্দোলন দমনে পুলিশের পাশাপাশি অংশ নেন বেরোবির একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। ছাত্রলীগ কর্মীরা হেলমেট পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করেন। একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ঢিল ছুড়েন, পুলিশকে নির্দেশনা দেন।

শিপন তালুকদার/এএমকে