ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার খুশিতে গরু এবং খাসির ভোজের আয়োজন করা হয়েছে ঢাকা কলেজে। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর আগে থেকে কিনে রাখা গরু-খাসি জবাই করা হয়েছে। রাত দশটার পর হলপাড়ায় ভোজে অংশ নেবেন ১ হাজার ২০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই আনন্দভোজের আয়োজন করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আনন্দভোজের জন্য কেনা গরুর দাম ৯৫ হাজার টাকা এবং ছাগলের দাম ১২ হাজার টাকা। আর জনপ্রতি টোকেন বিক্রি করা হয়েছে ১০০ টাকা করে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে তারা খুশি হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ দলীয় প্রভাবশালী সংগঠন হিসেবে শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলেছে। আর ক্যাম্পাসে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রায়ই সংঘাত, সহিংসতা এবং নিয়মশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতো। ফলে এমন কোনো সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্বস্তি বোধ করছেন।

আবু মুসা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতো। নিষিদ্ধের ফলে এই কার্যক্রমের আর কোনো সুযোগ নেই। আমরা এখন একটি শান্ত এবং সুন্দর একাডেমিক পরিবেশ পেয়েছি। আমরা চাই ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ ছাত্র রাজনীতিমুক্ত থাকুক।

রাসেল মিয়া নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শুধু ঢাকা কলেজই নয় বরং দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে খুশি হয়েছেন। সেজন্যই আমরা গরু-খাসি জবাই করে আনন্দভোজের আয়োজন করেছি। এতে প্রায় ১২০০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। আমরা ছাত্রলীগের অত্যাচার নির্যাতনের সেই সময়ে আর কখনো ফেরত যেতে চাই না।

আনন্দভোজের অন্যতম আয়োজক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সম্বন্বয়ক মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের আদুভাইয়েরা আমাদের হলগুলো দখল করেছিল। গেস্ট রুম, গণরুমের নামে তাদের নির্যাতনের নানান দরজা খোলা ছিল। সম্প্রতি তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া, আমরা ছাত্র-জনতার বিপ্লব পরবর্তী একটি নতুন পরিবেশ পেয়েছি। হলে সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিট দেওয়া হয়েছে। এই আনন্দেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে আজকের ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। 

এর আগে, গত বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

আরএইচটি/জেডএস