শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী নাঈমা নির্মা। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকাল পৌনে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ চবি মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে নির্মার মৃত্যু হয়েছে।

নাঈমা নির্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নরসিংদীর জেলার মনোহরদী উপজেলায়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুনম্বর গেট এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন নাইমা। দুপুর দেড়টা দিকে গোসলে শেষে রুমে এলে হঠাৎ বমি করতে থাকেন। এসময় তার মুখ দিয়ে ফেনা উঠলে বাসার কয়েকজনের সহায়তায় তার বান্ধবীরা তাকে চবি মেডিকেলে নিয়ে যান। পরে দুপুর ২টার দিকে অক্সিজেন দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তনু মহাজন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট এলাকা পর্যন্ত এলে অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। পরে হাটহাজারী থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে পুনরায় চমেক হাসপাতালের উদ্দেশে যান তারা। সেখানে পৌঁছলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাঈমার রুমমেট এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম নিথি। তিনি বলেন, নাঈমার অ্যাজমার সমস্যা ছিলো। শুক্রবার দুপুরে গোসলের পর তার মাথা ব্যথা শুরু হয়। এরপর হঠাৎ বমি করতে থাকে এবং তার মুখে ফেনা উঠতে থাকে। পরে বাসার আন্টির সহায়তায় আমরা তাকে চবি মেডিকেলে নিয়ে আসি। তার জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল। তবে চবি মেডিকেলে গাফিলতি কারণে অক্সিজেন দিতে দেরি হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তনু মহাজনের নিকট অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে চবি মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, প্রশাসন থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। চিকিৎসকের যদি কোনো গাফিলতি থাকে, অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা চবি মেডিকেলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা মেডিকেলের উন্নয়নে ১০ দফা দাবি পেশ করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন, ওষুধ সরবরাহ ও অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বৃদ্ধি, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নাঈমা নির্মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

আতিকুর রহমান/এমএসএ