ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে গত ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৩৯১ জনের নামপরিচয় উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী মাহিন সরকার শাহবাগ থানায় এই মামলার আবেদন করেন। এরপর বিকেলে শাহবাগ থানার অভ্যন্তরে প্রেস ব্রিফিং করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

মামলার এজাহারে শিক্ষার্থীদের হামলার নির্দেশদাতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলসহ ৩৯১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া, ৮০০ থেকে এক হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, গত ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যেভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এবং সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে আইনি ব্যবস্থায় যাওয়া আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি। আমরা আরও আগে মামলা করতাম কিন্তু তথ্যপ্রমাণ আমাদের হাতে আসতে সময় লেগেছে বলে আমরা তা করতে পারিনি। 

সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেন, আজ আমরা মামলার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি তা সারা দেশে চলমান থাকবে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, জেলা, উপজেলায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করা হবে। যেই সন্ত্রাসী সংগঠন এখনো রাজপথে স্লোগান দেওয়ার দুঃসাহস দেখায় তাদের প্রতিহত করতে ছাত্রসমাজ প্রস্তুত রয়েছে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করার রূপরেখা দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের রূপরেখা দেব, রূপরেখা দেব দেশের রাজনীতি কীভাবে হবে, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের,  বাহাত্তরের ফ্যাসিবাদী সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান তৈরির। আমরা মনে করি আমাদের বিপ্লব তখনই সফল হবে, যখন ফ্যাসিবাদী সংবিধান বাতিল হবে। 

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি তুললেও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কেন কিছু বলা হচ্ছে না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ছাত্রদের জায়গা থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলছি। জাতীয় রাজনীতির জায়গা থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলছি। আর কেউ যেন দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেই দাবিও তুলছি। 

সংবাদ সম্মেলন শেষে রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রায় চারশত নাম উল্লেখ করে মামলার আবেদন করেছে এবং অজ্ঞাতনামা আসামিও রয়েছে। আমরা এজাহার গ্রহণ করেছি। এটি আপাতত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।

কেএইচ/এমজে