অধ্যাপক আব্দুস সোবহান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিনে নিয়োগ পাওয়া ১৩৮ জনের মধ্যে মাত্র নয়জনের সিভি পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি। তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র তদন্ত কমিটি নিয়ে গেছে। বাকি ১২৯ জনের সিভি বা কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

শনিবার (১৫ মে) তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বন্ধ রেখেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৫ মে কাগজপত্র প্রস্তুত করে ৬ মে সবাইকে নিয়োগ দেন উপাচার্য সোবহান। ১৩৮ জনের তালিকা পেয়েছি। এর মধ্যে মাত্র নয়জনের সিভি আছে। বাকিদের নেই। এর মানে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা উপাচার্যের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তিনি অনেক বিষয়ের উত্তর দিতে পারেননি। অনিয়মের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, এখনো তদন্তকাজ শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেব।

তবে নিয়োগপ্রাপ্তরা দাবি করেছেন, উপাচার্যের কাছে একাধিকবার সিভি জমা দিয়েছিলেন তারা। কেউ কেউ বড় ভাইয়ের কাছে সিভি দিয়েছেন। 

নিয়োগপ্রাপ্ত মাহফুজ আল আমিন বলেন, উপাচার্যের কাছে একাধিকবার সিভি দিয়েছি আমরা। এগুলো প্রশাসনের কাছে আছে। নিয়োগ বিতর্কিত করতে এখন মিথ্যা কথা ছড়ানো হচ্ছে।

নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তৌহিদ মোর্শেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকজনের সিভি সংগ্রহ করে বড় ভাইদের কাছে দিয়েছি আমরা। তারা উপাচার্যকে দিয়েছেন। তবে সবশেষ কবে সিভি দিয়েছেন; সেটি বলতে পারবেন বড় ভাইরা।

এসব বড় ভাই কারা জানতে চাইলে তৌহিদ বলেন, ইলিয়াস ভাই, মাহাফুজ আল-আমিন ভাইয়ের মাধ্যমে আমরা কয়েকজন সিভি দিয়েছি। আরও কয়েকজন বড় ভাই আছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে জীবনবৃত্তান্তসহ আবেদন করতে বলা হয়। সব নিয়োগেই এমন হয়। 

নিয়োগ সংক্রান্ত আর কোনো ডকুমেন্টস জমা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব ডকুমেন্টস তদন্ত কমিটি নিয়ে গেছে। তদন্তাধীন বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না।

৬ মে মেয়াদের শেষ দিনে ১৪১ জনকে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানাজানি হলেও ১৩৮ জনের তালিকা পেয়েছে ইউজিসি। ​এ নিয়োগ অবৈধ উল্লেখ করে সেদিন সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

৮ মে ক্যাম্পাসে বর্তমান ও সাবেক উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করে তদন্ত কমিটি। তদন্তের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান স্থগিত করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র ও নিয়োগ তালিকা থেকে জানা যায়, নিয়োগ পাওয়া ১৪১ জনের মধ্যে রয়েছেন নয়জন শিক্ষক, ২৩ জন কর্মকর্তা, ৮৫ জন নিম্নমান সহকারী এবং ২৪ জন সহায়ক কর্মচারী। 

তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মী, সাংবাদিক নেতাসহ চারজন সাংবাদিক রয়েছেন।

এএম