দেশের সকল মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা পরবর্তী ইন্টার্নশিপ চালিয়ে যাওয়া চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। 

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‌‘২০০তম মেডিকেল ক্যাম্প উদযাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, দেশের সর্বোচ্চ সম্মানজনক পেশার একটি হলো ডাক্তার। কিন্তু আমরা দেখে আসছি আমাদের বন্ধু যারা দীর্ঘদিন ধরে রাতদিন পড়াশোনা করে পাস করার পরে এখন ইন্টার্ন করছে তারা তুলনামূলক সোশ্যাল ডিগনিটি পায় না। তাদের নামেমাত্র ভাতা দেওয়া হয়ে থাকে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় তাদের পড়াশোনা ও পরিশ্রম অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা মনে করি, তাদের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় অনেক ডাক্তার আমাদের সেবা প্রদান করেননি। আমাদের নাম পরিচয় অনেক ডাক্তার পুলিশকে দিয়েছে। তাদের পূর্বের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই তারা এমনটা করেছিল। তাই, আমি মনে করি ডাক্তাররা যেন কোন রাজনৈতিক পরিচয় না থাকে। ডাক্তারের পরিচয় এমনিতেই বড়, তাদের আলাদা ছাতার নিচে আসার প্রয়োজন দেখি না।

সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতে বাজেট খুবই কম। যার ফলে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের অবস্থাও বেশ শোচনীয়। করোনায় সময় সেটা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মালেক সাহেব এই খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। ফলে এখন অনেক দরিদ্র মানুষ তাদের সঠিক সেবা পায় না। অর্থের অভাবে তাদের চিকিৎসা আটকে যায়।

কাদের বলেন, এ সরকারের কাছে মানুষ তার আশানুরূপ ফলাফল পায়নি। তারা এখনো মানুষকে খুশি করতে পারেনি। সাধারণ মানুষের প্রতি আমরা সুবিচার করতে পারিনি। যারা জীবন দিয়েছে বা আহত হয়েছে তাদের পরিবারের অবস্থা ঠিক করতে বা চিকিৎসা করাতে আমরা সফল হইনি। ফলস্বরূপ আমাদের জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। আশা করি, সরকার অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের আশা পূর্ণ করবে।

অনুষ্ঠানে দেশের বন্যার রিপোর্ট পেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেডিকেল টিম লিডার আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা বন্যা কেন্দ্রিক সারাদেশে ১০৮টি ক্যাম্পের মাধ্যমে ৩০ হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছি। দ্বিতীয় দফায় ২০টি ক্যাম্পের মাধ্যমে ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে সেবা দেওয়া হয়েছে। বন্যার্ত এলাকায় সেবা দিতে আমরা টিএসসিতে মানুষকে ট্রেনিং দিয়েছি, যারা বন্যাকবলিত এলাকায় সরাসরি গিয়ে সেবা প্রদান করেছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার, স্বাস্থ্য কমিটির আহ্বায়ক নাহিদা বুশরা, সদস্য সচিব তারেক রেজা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেএইচ/এসকেডি