ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস আজ। ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের তৎকালীন অনুদ্বৈপায়ন ভবনের টেলিভিশন কক্ষের ছাদ ধসে ৪০ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন শিক্ষার্থী, ১৩ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও অতিথি। দুর্ঘটনায় আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী-কর্মচারী। আহতদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে যান চিরতরে। আজ সেই ট্র্যাজেডির ৩৯ বছর পূর্ণ হচ্ছে। 

এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় পনেরো ও সাতদলীয় ঐক্য জোটসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা। বিদেশি কূটনীতিকরাও শোক জানান। তিন দিন জাতীয় শোক ঘোষণা করে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে ১৬ অক্টোবর সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

১৯২১ সালে নির্মিত জগন্নাথ হলের ওই ভবনটি ভেঙে পড়ার আগে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেখানে কোন সংস্কার না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছিল। ভবন ধ্বসের পর পুরো ভবনটিই গুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই একই জায়গায় 'অক্টোবর স্মৃতি ভবন' নামে জগন্নাথ হলের নতুন একটি ছাত্রাবাস তৈরি হয়। 

নিহতদের স্মরণে অক্টোবর ভবনের নিচতলায় একটি ছোট জাদুঘর তৈরি করা হয়। সেদিনের ব্যবহৃত টিভিটিও রাখা আছে এই জাদুঘরে। মৃত্যুবরণ করা বেশ কয়েকজনের ছবিও আছে সেখানে। এ ছাড়া ভবনটির সামনে নিহতদের স্মরণে তাদের নাম সংবলিত একটি নামফলক স্থাপন করা হয়েছে। নামফলকের নিচে টিভি কক্ষের সিড়িটিকে আজো সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এবং টিভি কক্ষের স্থানে একটি সাদা রংয়ের শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে।

শোক দিবসে ঢাবি প্রশাসনের কর্মসূচি

১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় যে সকল ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি নিহত হয়েছেন তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দিবসটি পালন করা হবে।

শোক দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ৭টায় জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পুস্পস্তবক অর্পণ এবং সকাল ৮টায় জগন্নাথ হল অক্টোবর স্মৃতি ভবনস্থ টিভি কক্ষে মাননীয় উপাচার্যের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

কেএইচ/এমএসএ