বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুর দিন ৭ অক্টোবরকে ‘জাতীয় নিপীড়নবিরোধী দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে দেশের ১৩২টি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে এক সংহতি সমাবেশে সংগঠনগুলো এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে।

শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্ল্যাটফর্মটির মুখপাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দীন।

এসময় সংগঠনটির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জাকারিয়া নিক্সন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ রিদুয়ান উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে রায়হান উদ্দীন বলেন, গত ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদের ৫ম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ ঢাকার শাহবাগে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ থেকে শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদতবার্ষিকীকে (৭ অক্টোবর) জাতীয় নিপীড়নবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে এই দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়।

তিনি জানান, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ঘোষিত দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। আমরা আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই কর্তৃক ৭ অক্টোবরকে ‘জাতীয় নিপীড়নবিরোধী দিবস’ হিসেবে ঘোষণার দাবির সঙ্গে ১৩২টি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সংগঠনের নেতারা আমাদের ‘সংহতি বইয়ে’ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ৭ অক্টোবর এরপর আরও বেশকিছু সংগঠনের নেতারা আমাদের এ দাবির সঙ্গে সংহতি জানানোর জন্য ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছেন। তবে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ না পাওয়ায় আমরা সংহতিপত্র বইয়ে তাদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে পারিনি।

এর মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নবিরোধী সচেতনতা তৈরি হবে উল্লেখ করে রায়হান উদ্দীন বলেন, আমরা ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ মনে করি, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক নিপীড়িত হয়ে শাহাদত বরণকারী বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সংগঠিত শিক্ষার্থী নিপীড়নের নমুনা মাত্র। বিগত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদতবার্ষিকীকে ‘জাতীয় নিপীড়নবিরোধী দিবস’ হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে ছাত্রজনতার বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নবিরোধী সচেতনতা তৈরি আমাদের মূল উদ্দেশ্য। যাতে শহীদ আবরার ফাহাদের মতো কোনো শিক্ষার্থীকে নিপীড়নের শিকার না হতে হয়।

এ দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবির সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাদের জানানো সংহতিপত্র পৌঁছে দিতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা আশা করছি বাংলাদেশ সরকার ৭ অক্টোবরকে জাতীয় নিপীড়নবিরোধী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে দ্রুত উদ্যোগ নেবে।

কেএইচ/এসএসএইচ