চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলগুলোতে আসন বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও রেজাল্ট বৈষম্যের শিকার হয়ে অনেক শিক্ষার্থী আসন পাননি। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ধীরে ধীরে হলের আসন বরাদ্দের ফলাফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, খালি থাকা সাপেক্ষে শামসুন্নাহার হলে ২৮২টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১৭৪টি আসনই কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মোট আসন বরাদ্দের ৬১ দশমিক ৭ শতাংশ কোটায়। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দেওয়া হয়েছে ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ সিট।

অপরদিকে বেগম খালেদা জিয়া হলে ২১০টি আসনের মধ্যে ১৮৮টি আসন কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মোট আসনের ৮৯ শতাংশই দেওয়া হয়েছে কোটায়। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধায় দেওয়া হয়েছে ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশ সিট।

এ এফ রহমান হলের মোট ৩১৮টি মধ্যে কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯৬টি আসন। যা মোট আসন বরাদ্দের ৩০ শতাংশ। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সিট দেওয়া হয়েছে ১৮ শতাংশ।

অপরদেকে আলাওল হলের মোট ৩২০টি আসনের মধ্যে ৯২টি আসন (২৮ শতাংশ) কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১৮ শতাংশ।

শাহজালাল হলের ৪১৯টি আসনের মধ্যে ৫৩ টি (১৩ শতাংশ) আসন কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১১ শতাংশ।

শাহ আমানত হলের ৫৪৭টি আসনের মধ্যে ৭৩টি আসন কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা মোট আসন বরাদ্দের ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কোটায়। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ।

সোহরাওয়ার্দী হলের ৫৪৫টি আসনের মধ্যে কোটায় ১৩২টি আসন কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১৭ শতাংশ।

শহীদ আব্দুর রব হলের ৪৬৯টি আসনের মধ্যে ৬২টি, মাস্টার দ্যা সূর্য সেন হলের ১৪০টি আসনের মধ্যে ১৭টি,  আর্টিস্ট রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের ১৭টি আসনের মধ্যে ৮টি আসন কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ব্যাচের রেজাল্ট কম থাকায় বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ, ফিজিক্যাল এডুকেশন বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী আসন পাননি। সংস্কৃতি বিভাগের ১ম বর্ষের কোন শিক্ষার্থী আসন পাননি। অপরদিকে কয়েকটি বিভাগের দুই একজন করে শিক্ষার্থী আসন পেয়েছেন।

মেধায় আসনের ওয়েটিং লিস্ট থাকলেও কোটায় কোন ওয়েটিং লিস্ট নেই। অর্থাৎ কোটায় যারাই আবেদন করেছে তাদের সবাইকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন,  আসন বরাদ্দে সাবজেক্ট অনুযায়ী বণ্টন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। আমরাও শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে চাই। কিন্তু তা করতে গিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে অমান্য করতে পারি না। আসন বরাদ্দের নীতিমালা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবিগুলো আসুক। আমরা বৈষম্য বিলোপ করে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা দীর্ঘদিন না হওয়া কাজগুলোতে হাত দিয়েছি, তাই কাজ করলে ভুল হতে পারে। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সবগুলো কাজ করেছি দ্রুত ক্লাস চালু করার জন্য। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলোকে আমরা স্বাগত জানাই।

আতিকুর রহমান/এমটিআই