চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) মাস্টার্সের ভর্তি ফি ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে এক লাফে ১০ হাজার ৬০০ টাকায় বৃদ্ধি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

হঠাৎ করে ভর্তি ফি বৃদ্ধি করায় বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও প্রান্তিক অঞ্চলের ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের ভর্তি ফি পুনঃনির্ধারণ করে ১০ হাজার ৬০০ টাকা করা হয়।

ক্ষোভ প্রকাশ করে দুর্যোগ প্রকৌশল ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অরিত্র আরহান সাব্বির বলেন, চুয়েটের বর্তমান মাস্টার্স প্রোগ্রামের ভর্তি ফি পূর্বের তুলনায় চারগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। অথচ চুয়েটের মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল কিংবা পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। এ ছাড়া লাইব্রেরি, ল্যাব, এথলেটিক্স, ইউনিয়ন ইত্যাদি বিভিন্ন ফি বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে। আবার মাস্টার্স প্রোগ্রামে আমাদের কোনো সেশনাল ক্লাস না থাকার পরেও বড় অংকের ল্যাব ফি নেওয়া হচ্ছে।

অরিত্র আরহান বলেন, আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। হুট করে এতগুলো টাকা জোগাড় করা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে কোনো যৌক্তিক সমাধান না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই টাকা ধার-দেনা করে ভর্তি হতে হয়েছে। আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে যৌক্তিক সমাধানে আসবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ সাজিদ বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ভর্তি ফি ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা। এরপর ৭ থেকে ৮ মাসের ব্যবধানে নতুন প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এই ভর্তি ফি ১০ হাজার ৬০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। ভর্তির আগের দিন চারগুণ বেশি ভর্তি ফি দেখে আমরা অনেকেই ভর্তি হইনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, প্রশাসন ভর্তি ফি পুনরায় নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছিল। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি পর্যালোচনা করে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে তার সাপেক্ষে একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫০তম সভায় নতুন ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু লিখিত আবেদন আমার কাছে এসেছে। উপাচার্য নিয়োগের পর একাডেমিক কাউন্সিল সেগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছুদিন আগে ভর্তি ফি পুনরায় নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে তার প্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫০তম সভায় নতুন ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়। তবে নতুন ভর্তি ফি শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত মনে হওয়ায় তারা লিখিতভাবে আমাদের জানিয়েছেন। উপাচার্য নিয়োগের পর একাডেমিক কাউন্সিল সেগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

আতিকুর রহমান/এনএফ