জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাত লাখ টাকার ‘ফাও’ খেয়েছেন। বাকির নাম করে খেলেও পরবর্তী সময়ে এ পরিমাণ অর্থ তারা আর পরিশোধ করেননি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মো. মাসুদ। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দিয়েছেন বেশিরভাগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। তারা ক্যাম্পাসেও আসছেন না। এ পরিস্থিতিতে কী করবেন তা ভেবে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক। 

তিনি জানান, ক্যাফেটেরিয়ায় জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির নামে বাকি রয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার টাকা। শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের নামে বাকি রয়েছে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা।

এছাড়া, বাকির হিসাবে নাম রয়েছে ছাত্রলীগের আরো অন্তত পাঁচ নেতাকর্মীর। শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির ‘মাই ম্যান’ খ্যাত রবিউল ইসলাম রবির নামে বাকি ৫২ হাজার টাকা। সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসানের গ্রুপ লিডার খ্যাত মিরাজের নামে বাকি রয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান বাবুর নামে বাকি ৫৫ হাজার টাকা। 

সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের আরো দুই নেতা তামিম ও সাজবুলের নামে বাকি রয়েছে যথাক্রমে ১২ ও নয় হাজার টাকা। ছাত্রলীগের এই সাত নেতাকর্মীর নামেই বাকি সর্বমোট ছয় লাখ ৪১ হাজার টাকা। এছাড়া, অনেকে বাকি খেলেও সেগুলোর কোনো হিসাব নেই। 

ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক মো. মাসুদ বলেন, দীর্ঘদিন বাকি খেয়েছে তারা। টাকা দেবে দেবে করে আর দেয়নি। এর বাইরে আরো অনেকে আছে যারা টুকটাক খেয়েছে, তার হিসাব নেই। খেয়ে তারা টাকা দিতো না। আবার খাবার দিতে দেরি হলেও ক্যান্টিনের ওয়েটারদের মারধর করেছে সাজবুলসহ বেশ কয়েকজন।

তিনি বলেন, ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা বাবদ সপ্তাহে খরচ হয় ৩৯ হাজার ৭৫০ টাকা, মাসে এক লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এছাড়া, মালামাল বাবদ খরচ তো আছেই। তার ওপর এতো টাকা বাকি। যেখান থেকে আমি মালামাল কিনি, সেখানেও আমার বাকিতে কেনা লাগে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বাকির এত টাকা এখন কীভাবে ওঠাবো, আর কীভাবে আমি এই লস পূরণ করব?

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. কে এ এম রিফাত হাসান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে, বিষয়টি সত্য হলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা নিয়মিত শিক্ষার্থী হলে তাদের থেকে টাকা আদায় করার ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে দরকার হলে প্রশাসনিকভাবে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএল/কেএ