আশুলিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে এক শ্রমিক নিহতের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন তারা। অবরোধ শেষ হয় দুপুর ২টায়। এ সময় মহাসড়কের উভয় লেনে যানজট সৃষ্টি হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিষেবার যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

অবরোধের বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি বলেন, আমরা যে অভ্যুত্থানটি ঘটিয়েছি সেটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের যতখানি ঠিক ততখানি অংশগ্রহণ ছিল শ্রমিকদের। কখনো কখনো শ্রমিকরা অগ্রভাগে ছিলেন এবং জীবন দিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট লং মার্চে অসংখ্য পোশাকশ্রমিকের অংশগ্রহণ ছিল। কাজেই সেই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন সরকারের হাতে, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে আন্দোলনরত পোশাকশ্রমিকরা খুন হচ্ছে সেটি আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষোভের। আমরা কড়া হুঁশিয়ারি দিতে চাই, সরকার যদি ভাবে শ্রমিকদের দমিয়ে রাখবে তাহলে দরকার হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদের কাফেলা গিয়ে শ্রমিকদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এবং তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে পাশে থাকবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ জেনিস বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আশুলিয়ার শ্রমিকরা বুক পেতে লড়াই করেছে। আজ কেন তাদের বুকে গুলি হলো? ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্রে তো আমরা এটা চাই না। আমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি সেই বিশ্ববিদ্যালয় শ্রমিকের টাকায় চলে, আমার শিক্ষকের বেতন হয় শ্রমিকের টাকায়, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় করা হয় শ্রমিকের টাকায়। যার কারণে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি শ্রমিকের কাছে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা শ্রমিকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। এই দায় এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিতে কাউসার নামের এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত পাঁচজন আহত হন।

মেহেরব হোসেন/এমজেইউ