বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ঈশা খাঁ হলে সিট বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। হলে অবস্থানরত ৩৪ জন শিক্ষার্থী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, হলের সিট পাওয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে মোট দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। অভিযুক্ত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন আবু রেজওয়ান আল রামীম, আরিফুল অনিক, আরিফুল ইসলাম পিয়াস, আদনান সামি, নাহিদ, আকাশ, সাইফ ও হাসিব। তবে, ৫ আগস্টের পর তারা কেউ হলে অবস্থান করছেন না।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা বরাবরই হলের সিটের জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অন্যায়ের শিকার হয়েছেন। যেসব শিক্ষার্থী ভর্তির পর প্রথম ধাপেই হলে উঠতে পারেন না পরবর্তীতে তারা নিজেদের ন্যায্য সিট পেতেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছে টাকা দিতে বাধ্য হন। একই শিক্ষার্থীকে একাধিকবার টাকা দিতে বাধ্য করা হতো, অথচ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সিট দেওয়া হতো না।

তারা আরও জানান, এ অভিযোগ শুধু নতুন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়, অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাকৃবিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে আসা শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে সিটের বিনিময়ে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন। ছাত্রলীগের ওই নেতারা নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে সিট বাণিজ্য চালিয়েছেন। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে। যারাই তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন, নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতেন।

সিট বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আদনান সামি বলেন, সিট বাণিজ্যের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। হলে যারা উঠেছেন তাদের থেকে টাকা নিয়েছি, এমন অভিযোগ কেউ দিতে পারবেন না। হলে কারা সিট বাণিজ্য করতেন, সেটিও আমার জানা নেই। হয়তো রাজনীতি করতাম, এ কারণে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিথ্যা অভিযোগ।

অভিযুক্ত কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ছাত্রসমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল অনিক বলেন, হলের সিট বাণিজ্যের বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। হলের রাজনীতির সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম না। আমি অনুষদীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। অনেকেই ভাবেন যে রাজনীতি করার মানে হলো সিট বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকা। অনুষদীয় রাজনীতির কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

তবে, অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

সিট বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির বিষয়ে ঈশা খাঁ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, আমরা কাছে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে, ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে যারাই জড়িত তদন্তের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/