ক্যাম্পাসভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার্থীদের দুর্বৃত্ত ও খুনি বানায় উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে একদল শিক্ষার্থী।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টে’র আয়োজনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষাঙ্গনে দলীয় রাজনীতি ছাত্রদের দুর্বৃত্ত বানায়’, ‘মত-পথ-রাজনীতি যারা যার, দেশ-শিক্ষাঙ্গন সবার’, শিক্ষাঙ্গনে দলীয় সংঘাত ধ্বংসাত্মক, শিক্ষাঙ্গণ থাকুক মুক্ত নিরাপদ’, শিক্ষাঙ্গণ দলীয় রাজনীতির স্থান নয়’, শিক্ষাঙ্গণ দলীয় আধিপত্যের জায়গা নয়’, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দলীয় রাজনীতির আখড়া করে যারা, জীবন-দেশ-শিক্ষার শত্রু তারা’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। 

বক্তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের রাজনীতির চর্চা অবশ্যই থাকবে, থাকতে হবে। তবে সেটা হতে হবে কেবল অ্যাকাডেমিক ও সংঘাতমুক্ত এবং নিরাপদ সৌহার্দ্যমূলক। প্রতিষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের দলীয় সাংগঠনিক মাঠের রাজনীতির কর্মসূচি ভয়ংকর ধ্বংসাত্মক যা কেবল গুন্ডাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য দলীয় রাজনীতি নয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সব অবাঞ্ছিত সংঘাত ও দলীয় আধিপত্য থেকে মুক্ত না রাখলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আসল উদ্দেশ্য ধ্বংস হয়ে অসৎ স্বার্থের বিপজ্জনক হাতিয়ার হয়ে যাবে।

ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেজাউল কাউছার বলেন, আমরা পত্রিকা খুললেই, মিডিয়ায় তাকালেই দেখতাম রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হতো। ৫ আগস্টের আগে দাবি ছিল শিক্ষাঙ্গণ হবে দলীয় রাজনীতিমুক্ত। যার সঙ্গে দেশের সব শিক্ষার্থী ঐকমত্য পোষণ করেছিল। শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের কারণেই এই গণআন্দোলনে তাদের পতন হয়েছে। কোনো দল এই আন্দোলনের ক্রেডিট নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের ক্রেডিট সাধারণ ছাত্র-জনতার।

তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা বিশ্বকে চালাচ্ছে অথচ তাদের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি নেই। অথচ এদেশের ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি রাখার বিষয়ে মত দিচ্ছে দলের নেতারা। এগুলো বলে আমাদের ‘আইওয়াশ’ করা হচ্ছে। আমরা ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে না। আমরা চাই, ক্যাম্পাসভিত্তিক রাজনীতি না, রাজনীতি হবে ক্যাম্পাসের বাইরে। এখানে ধর্ম, জাতিভিত্তিক কোনো রাজনীতি হবে না। আমরা শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নষ্ট করতে দিতে পারি না।

কেএইচ/জেডএস