২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতনের পর ছাত্ররাজনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার আসবে এবং কেউ বিরোধী মতের ওপর চড়াও হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সাদিক কায়েম। এসময় রাজনৈতিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টায় ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাবি শিবির সভাপতি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে, সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি হবে ছাত্র সংসদ কেন্দ্রিক– উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জানি এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি আর কোনো রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই রাজনীতির আদর্শে ছাত্ররাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে। ভবিষ্যতের ছাত্ররাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু কোনো হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্ররাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপরপক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না। একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্রসংসদ ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি।

খুন, গুম, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি এসব ফ্যাসিবাদের অংশ উল্লেখ করে সাদিক কায়েম বলেন, ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্ররাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা। ফ্যাসিবাদ ছাড়া সব বাদ, ইজম ও রাজনীতি ফ্যাসিবাদে অনুপস্থিত থাকে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি নাই, শুধু ফ্যাসিবাদই আছে। টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি না, এগুলো ফ্যাসিবাদ।

ফ্যাসিবাদের পতনের পর মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গত ১৬ বছরের ভয়ংকর দিনগুলো কিংবা তারও আগের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো রাজনীতির প্রতি তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করেছিল তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। কিন্তু চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সব ভুল ভেঙে দিয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নতুন সচেতনতা। দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে, ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’।

কেএইচ/এসএসএইচ