রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষিকাকে অব্যাহতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে উপস্থিত হন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। 

তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা মনে করো না এভাবে চাপ প্রয়োগ করে তোমরা তোমাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে ফেলবে। আমরা সকল সমস্যা সমাধানে সবসময় তৎপর রয়েছি। আগামী রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) তোমাদের মধ্যে ১২ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের নিয়ে বসে আমি তোমাদের সব কথা শুনবো।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে অবস্থান নিলে তিনি এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীদের।

এদিকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার মধ্যে অধ্যাপক ড. মাহবুবা কানিজ কেয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ, পর্যাপ্ত ক্লাস না নেওয়া এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-অবিচার এবং অধ্যাপক ড. নাজমা আফরোজের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা, রুমে ডেকে হুমকি ও মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখানোর অভিযোগ এনে বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এই দুইজন শিক্ষিকাকে অবাঞ্ছিত করার পাশাপাশি পাঁচ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো—কোনো শিক্ষক কর্তৃক কোনো শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়া যাবে না এবং ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে রেজাল্ট টেম্পারিং করা যাবে না, শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি বা রেষারেষি বন্ধ করতে হবে, ড. নাজমা আফরোজ ও ড. মাহবুবা কানিজ কেয়াকে অব্যাহতি দিতে হবে, দলীয় প্রতিহিংসার শিকার ড. এনামুল হকের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সঠিক তদন্তের মধ্য দিয়ে দুই কর্মদিবসের মধ্যে তাকে অ্যাকাডেমিক কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে, পরিচ্ছন্নতা কর্মী শ্রী রাম হেলাকে বিভাগে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং ডিপার্টমেন্টের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এই লিখিত দিতে হবে যে, ওনারা ডিপার্টমেন্টের সকল কার্যক্রম রুটিন অনুযায়ী করবেন।

জানতে চাইলে অধ্যাপক নাজমা আফরোজ বলেন, ড. এনামুল হক যেহেতু শাস্তিপ্রাপ্ত তাই তিনি এসব করে যাচ্ছেন। তিনি চান না আমি বিভাগে আসি। কিন্তু কেন এমন চাচ্ছেন বা শিক্ষার্থীরা কেন এমন করছে তা আমার জানা নেই। যা হচ্ছে সবই আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র।

এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী বাসেত বলেন, আমরা প্রথমে ১২ দফা দাবি নিয়ে বিভাগে গেলে আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সদুত্তর আমরা পাইনি। পরে এই দাবিগুলোর মধ্য থেকে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আমরা প্রশাসনিক ভবনে গিয়েছিলাম। উপাচার্য স্যার আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আগামী রোববার বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং শিক্ষকদের নিয়ে বসবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

জুবায়ের জিসান/এএমকে