বাইরে কড়া রোদের ঝলকানি, বাতাসে গরমের ঝাঁঝ। এর মধ্যে তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অনেকেরই দেখা দিচ্ছে সর্দি-কাশির মতো মৌসুমি অসুস্থতা। এমন পরিস্থিতিতে ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছেন না তারা।

গত এক সপ্তাহ থেকে রংপুর অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের তীব্রতা বেড়েছে। ঘন ঘন হচ্ছে লোডশেডিং। আর একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে আসছে এক থেকে দুই ঘণ্টা পর। দিন ও রাতের বড় একটা সময় বিদ্যুৎ থাকছে না।

এদিকে রংপুর অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ রংপুর অঞ্চলের মানুষ গরমে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির ইসলাম বলেন, এখন প্রচণ্ড গরম। বিদ্যুৎ না থাকলে গরমের জন্য রুমেও থাকা যায় না। আর পড়ালেখাও ঠিকমতো হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়া কী যে অসুবিধায় আছি তা বলে বোঝাতে পারবো না। বিদ্যুৎ চলে গেলে মেসে পানিও থাকে না। রুমে ভ্যাপসা গরম হয়ে যায়। বার বার শরীর ঘেমে যাওয়ায় রাতেও ঘুম হয় না। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন আলম বলেন, আমরা বিদ্যুতের কারণে অনেক ভোগান্তি পোহাচ্ছি। দিন রাতের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। প্রচণ্ড গরমে ঘেমে ঘেমে সর্দি-কাশি শুরু হয়েছে দুই দিন ধরে। ভালো হচ্ছে না।

পার্ক মোড় এলাকার চা বিক্রেতা মঞ্জু মিয়া বলেন, এত গরম সহ্য করা যায় না। মনে হয় সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছি। কারেন্টও থাকে না যে একটু বাতাসে জিরাবো।

সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলায় নেসকো ও পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। তবে সরবরাহ মিলছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় ঘাটতি প্রায় ৯০০ মেগাওয়াটের বেশি।

অন্যদিকে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকো মিলে চাহিদা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। সেখানে মিলেছে ৮০০ মেগাওয়াটেরও কম। চাহিদার তুলনায় ঘটতি ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি।

রংপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। অবস্থা উত্তরণে চেষ্টা চলছে।

শিপন তালুকদার/এফআরএস