সীমান্তে হত্যা এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাংলাদেশ নিয়ে দেওয়া মন্তব্যের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন করেছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে ভারতের বিচার দাবি করেছেন তারা।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবন থেকে মিছিল নিয়ে সিনেট সংলগ্ন প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় পাক-চীন সীমান্তে কাপো থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেনো শিশু মারো? ফেলানী থেকে স্বর্ণা, স্বর্ণা থেকে জয়ন্ত তারপর? বাংলাদেশের জলসম্পদ নিয়ন্ত্রণকারী আগ্রাসী দিল্লির দখলদারিত্ব নিপাত যাক। এসব লেখা সম্বলিত প্লেকার্ড শিক্ষার্থীদের হাতে দেখা যায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ভারত বর্ডারে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে। আবার যদি দাঁড়াতে হয় সারা দেশের শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী সমাজ রুখে দাঁড়াবে। আগে ভারতকে হাজার টন ইলিশ পাঠালে ওরা আমাদের আবরার, স্বর্ণা, জয়েন্ত, ফেলানীর লাশ উপহার দিয়েছে। আমরা শেখ হাসিনা-মোদীর মতো বন্ধুত্ব চাই না। এতদিন পর্যন্ত যত হত্যা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক ফজল বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা এ স্বাধীনতা অনুভব করতে পাচ্ছি। বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে স্বর্ণা, জয়েন্ত খুন এবং ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিং কর্তৃক বাংলাদেশকে জঘন্য ও বেআইনি হুমকি প্রদানের বিরুদ্ধে এখানে রাষ্ট্রনীতি বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে আমরা তীব্র ও নিন্দা জানাচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে আমরা বলতে চাই আপনি আপনার নিজের চরকায় তেল দিন। আপনি নিজেই নিজের দেশকে বাঁচান। বাংলাদেশকে নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। বাংলাদেশে যদি একটা বুলেট ছোড়া হয় তাহলে আমরা ১০টা বুলেট ছুড়ব।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, দিল্লি না ঢাকা স্লোগান আমাদের জন্য অবমাননাকর। আমরা ঢাকাকে দিল্লির সঙ্গে তুলনা করতে চায় না। এখন বাংলাদেশ আর সেই পর্যায়ে নেই। আমরা চুপ করে বসে থাকব না। আমরা ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির বন্ধুত্ব চায় না, আমরা দেশের সঙ্গে দেশের বন্ধুত্ব চায়। আজকে যে হত্যাকাণ্ডগুলো হচ্ছে তা পৃথিবীর আর কোথায় হয় না। এগুলা আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে। আমরা চায় ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে এর সুষ্ঠু বিচার করা হোক।

মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকসহ চার শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

জুবায়ের জিসান/এমজে