ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আবাসিক ও একাডেমিক স্থানসমূহ সকল প্রকার দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দেওয়া, নির্বাচনে প্যানেল বাতিল করে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করাসহ ছাত্র রাজনীতি নিয়ে ৮টি প্রস্তাবনা দিয়েছে ইউনিভার্সিটি রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইউআরআই)।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন প্ল্যাটফর্মটির মুখপাত্র আদনান মুস্তারি। 

শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনাসমূহ হলো,

১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক স্থান (হল, হোস্টেল প্রভৃতি) এবং একাডেমিক স্থানে (অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট প্রভৃতি) সকল প্রকার দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি (সভা-সমাবেশ, মিছিল, মিটিং, সম্মেলন, র‍্যালি, শোডাউন প্রভৃতি) নিষিদ্ধ করা হবে।

২. কোনো প্রকার রাজনৈতিক পরিচয় বা সংশ্লিষ্টতা ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উল্লেখিত স্থানসমূহে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা, কোনো সুযোগ-সুবিধা আদায় বা বিশেষ বিবেচনা লাভের প্রচেষ্টা চালাতে পারবে না।

৩. কোনো শিক্ষার্থী যদি উল্লেখিত কর্মকাণ্ডসমূহে জড়িত হয় তবে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এই মর্মে সিন্ডিকেটে আইন পাস করতে হবে।

৪. উল্লেখিত স্থানসমূহে কোনো দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের প্রচেষ্টা ব্যতিরেকে ব্যক্তিগত পরিসরে কেউ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের সাথে একাত্মতা পোষণ করলে বা নিজস্ব মত প্রকাশ করলে তাকে কোনো শাস্তির আওতাভুক্ত করা হবে না।

৫. দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বৈধ শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী বা ভোটার হিসেবে অংশ নিতে পারবে। স্নাতক পর্যায়ের বৈধ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ভর্তি হওয়ার সেশন থেকে বর্তমান শিক্ষাবর্ষের পার্থক্য ছয় (৬) - এর বেশি হবে না। যেমন, ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষ ধরে নিয়ে, ২০১৭-১৮ সেশনের সকল বৈধ শিক্ষার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। একই ভাবে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভর্তি সেশনের সাথে বর্তমান সেশনের পার্থক্য দুই এর বেশি হতে পারবে না।

৭. ডাকসু বা হল সংসদ নির্বাচনে সকল প্রার্থীকে স্বতন্ত্র ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। সকল প্রার্থীকে স্বতন্ত্র ভাবে নিজস্ব ইশতেহার ঘোষণা করতে হবে। কোনো প্যানেল হিসেবে কেউ নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রচার- প্রচারণা চালাতে পারবে না।

৮. ছাত্র-শিক্ষকের সমন্বয়ে অভিজ্ঞ প্যানেল তৈরি করে ডাকসুর সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলার সুপারিশমালা প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের সংশোধনী বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী রাফিয়া রেহনুমা, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী তামিম মুনতাসির, ফজলুল হক মুসলিম হলের আনোয়ার ইব্রাহীম বিপ্লব, বিজয় একাত্তর হলের জোবায়ের হোসেন শাহেদ, ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের রেদওয়ানুল হাসান শান্ত প্রমুখ। 

কেএইচ/এসকেডি