জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যাতীত অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে যদি উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে তাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ‘বহিরাগত উপাচার্যদের জন্য গেইটলক’ নামে একটি ব্যানারও টানানো হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে এ ব্যানার টানানো হয়। এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে জবির শিক্ষকদের মধ্য হতে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে চতুর্থ দিনের মত বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য হতে উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, জবিতে বিগত দিনে যত উপাচার্য এসেছেন তারা শুধু নিজেদের রুটিন দায়িত্বই পালন করে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যা সমাধানের দিকে তাদের কোন নজর ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতেই বছরের পর বছর লেগে যেত পূর্বের উপাচার্যদের। পরবর্তীতে সমস্যা সমাধানের নাম করে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে নিয়ে চলে গেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নূর নবী বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই যিনি আমাদের উপাচার্য হবেন তাকে অবশ্যই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হবে। বিগত দিনে আমাদের এখানে যারাই উপাচার্য হয়ে নিয়োগ পেয়েছেন তারা আমাদের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মৌলিক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ কিভাবে লুট করা হয়েছে উপাচার্যদের মাধ্যমে তা আমার সাবেক উপাচার্যদের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি। আমরা এই নতুন বাংলাদেশে সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে চাই। আমাদের উপাচার্য যদি আমাদের শিক্ষকদের মধ্য হতে হয় তাহলে তার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে তার কাজের জন্য জবাবদিহিতা আওতায় নিয়ে আসতে পারবো। তার থেকেও বড় কথা হলো আমাদের শিক্ষকেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যা সম্পর্কে অবিহিত। উপাচার্য হওয়ার পরই সে আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করতে পারবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরের আমার শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি- বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব আসতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য দিতে হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ‍ও কর্মচারীরা মানবেনা।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য হতে উপাচার্যের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে আসছে শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারিরা। বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের পাশাপাশি প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক শিক্ষক শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর করে তা শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তরে গত ২৬ আগস্ট।

এসএমডব্লিউ