রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) যৌন নিপীড়ক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদ। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা এ বিক্ষোভ করেন। বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রীরাও এতে অংশ নিয়েছেন।

সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে জোহা চত্বরের সামনে জড়ো হোন শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা। পরে বুদ্ধিজীবী চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তারা।

বিক্ষোভ মিছিলে ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, রাবিয়ানদের অ্যাকশন’, ‘যৌন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘নিপীড়কদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘হাফিজুর রহমানের ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘পুরনজিৎ এর ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘মোস্তাকদের ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সাগরের ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘শশীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ এসব স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেশকাত মিশু বলেন, শিক্ষকরূপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আমাদের বাবার মতো এবং যারা জাতির বিবেক তারা যদি তাদের মেয়ের বয়সী আমাদের বোনদের সঙ্গে এমন যৌন নির্যাতন করে, তাহলে রাবি একটা সভ্য বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। আজকে যে-সব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে, তাদের প্রত্যেকের পেছনে দলীয় সিন্ডিকেট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য জায়গায় একেকটা ক্ষমতার চেয়ার আছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এভাবে বারবার যৌন নিপীড়ন এবং অ্যাকাডেমিক স্বৈরাচার চালিয়ে যাওয়ার পরেও তারা রেহাই পেয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, ৫৩ বছর ধরে চলা শিক্ষকদের এই লেজুড়বৃত্তিক শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষকদের প্রধান কাজ হবে শিক্ষকতা, গবেষণা এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। 

জানতে চাইলে রাবি সমন্বয়কদের পৃষ্ঠপোষক ও মানবাধিকার কর্মী রাশেদ রাজন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ক ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ঘোষণা। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের আজকের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি। ছাত্র সমাজ যদি স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে পারে, সেখানে যৌন নিপীড়ক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের কতটুকু সময় লাগবে? যদি শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকে, তাহলে তাদের দ্রুত সময়ে মধ্যে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব। 

বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

জুবায়ের জিসান/এফআরএস