ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কর্মকর্তাই অফিস সময় শেষ হওয়ার আগেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার (২৫ আগস্ট) ঘটে ব্যতিক্রম ঘটনা। কর্মকর্তারা বাসায় ফিরতে দুপুর ২টার বাসে ওঠেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে তাদের অফিসে ফেরত পাঠান। 

জানা যায়, গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে বাসায় ফেরার জন্য অনেক কর্মকর্তা বাসে ওঠেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের পুরো সময় অফিস করতে বাস থেকে নেমে যেতে বলেন। পরে কর্মকর্তারা নিজ অফিসে ফিরে যান এবং পুরো সময় অফিস করে বিকেল ৪টার বাসে বাসায় ফেরেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তা অফিসে এসে আম বাগানে চায়ের দোকানে সময় কাটান। সেখানে দাবা খেলা এবং খোশ গল্পে মেতে থাকেন। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাজে গেলেও সেবা পান না। শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচলিত আছে অনার্স-মাস্টার্স করার থেকেও সার্টিফিকেট উত্তোলন বেশি কষ্ট। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন। এটি সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং কর্মকর্তা সমিতির নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হন।

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইনরান হাসিব বলেন, আমরা ক্যাম্পাস জীবনের শুরু থেকেই দেখে আসছি দুপুর ২টার ট্রিপে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা ভিড় লেগে থাকে। অথচ তাদের অফিস ছুটি হয় বিকেল ৪টায়। তারা অফিস ফাঁকি দেন, তারা ছাত্রদের বাসে উঠে ভিড় করেন এবং সামনের সিটগুলো অন্যায়ভাবে দখল করে নেন। দীর্ঘদিন এই অন্যায় সহ্য করার পর গত বুধবার তাদেরকে অনুরোধ করা হয়- অফিস ফাঁকি দিয়ে ছাত্রদের বাসে উঠে চলে না যেতে। কিন্তু তারা ছাত্রদেরকে তোয়াক্কা না করে রোববার দুপুর ২টার সবগুলো বাসে উঠে শহরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। তখন শিক্ষার্থীরা সবগুলো বাস থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নামিয়ে দেন এবং ৪ টায় উনাদের অফিস ট্রিপে শহরে ফেরার অনুরোধ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, কর্মকর্তারা ঠিকমতো অফিস করেন না, আমবাগানে বসে থাকেন। আবার ২টার বাসে তারা চলে যান। তাদেরকে এভাবেই গত ৬ বছর দেখে আসছি। এদিকে প্রশাসনিক ভবনে গেলে খারাপ ব্যবহার করেন। এদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষকদেরও ফুল টাইম অফিস নিশ্চিত করা জরুরি। 

ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি দেওয়ান টিপু সুলতান বলেন, কর্মকর্তাদের অবশ্যই ফুল টাইম অফিস করতে হবে। তবে ক্যাম্পাসের শুধু কন্ট্রোলার শাখার কাজ চলছে। দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা এসে যেন ভালো সেবা পান সেজন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এ ছাড়া উাপাচার্য নিয়োগ হলে আমাদের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করে সেগুলো সংশোধন করা হবে।

রাকিব হোসেন/আরএআর