উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

এ সময় ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’,‘আমার দেশ ডুবল কেনো, সরকারের কাছে জবাব চাই’, ‘পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়তে হবে ভারত ভক্তি’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ এবং বিভিন্ন মোদিবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মেশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে আন্তর্জাতিক নদীগুলো আছে তার পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। এছাড়াও ইতোপূর্বে ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে ভারতের যে অন্যায্য ও গোপন চুক্তিগুলো হয়েছিল তা দ্রুত বাতিল করতে হবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোনো বাঁধ খুলে দেওয়া যাবে না।

আরবি বিভাগের শিক্ষক ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক নেই। উগ্র, ফ্যাসিস্ট, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সেখানে শাসন করছে। তারা যেভাবে আমাদের শোষণ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নদীর পানি। আজ তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমের চেতনায় জেগে উঠেছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার অনেক দূরদর্শী ছিলেন। তিনি ভারত নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করায় তাকে মেরে ফেলা হয়। রাজনৈতিকভাবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে না পেরে এখন পানি নিয়ে খেলা শুরু করেছে।

প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকার একটা অত্যন্ত নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং এই রাষ্ট্রকে ভারতের অলিখিত কলোনিতে পরিণত করেছিল। তারা এই কাজটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার সঙ্গে কোনো আধিপত্যবাদ চলে না, কোনো জাতি কখনো আধিপত্যকে মেনে নেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেনি। ভারত সরকার কি শেখ হাসিনার বন্ধু হয়ে থাকতে চায় নাকি বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু হয়ে থাকতে চায়? তারা যদি শেখ হাসিনাকে বন্ধু হিসেবে বেঁচে নেয় তাহলে বাংলাদেশর জনতার শত্রুতাকে তাদের বেছে নিতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ মহানগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী এই বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়।

জুবায়ের জিসান/এফআরএস