বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, নোয়াখালী, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুমিল্লাসহ বেশ কিছু জেলায় আকস্মিক বন্যার জন্য দায়ী ভারত। তাছাড়া বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতেই হঠাৎ বাঁধ খুলে দিয়ে দেশে বন্যা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২১ আগস্ট) রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ভারতের সাথে বাংলাদেশের পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এবং ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা এমন মন্তব্য করেন।  

এসময় শিক্ষার্থীরা, ‘ভারতীয় আগ্রাসন ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘বন্যায় যখন মানুষ মরে, আবরার তোমায় মনে পরে’, ‘মোদির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ বি যুবায়ের বলেন, বাঁধ ছাড়ার আগে প্রশ্ন হলো ভারত কৃত্রিমভাবে বাঁধ দিলো কেন? ৫৪টি নদীর মধ্যে ১৯টিতে অবৈধ বাঁধ দিয়েছে ভারত। কৃষক চাষের জন্য পানি পায় না, কিন্তু বর্ষার মৌসুমে তারা পানি ছেড়ে দেয়। ফলে এদেশে বন্যা হয়। স্বৈরাচার হাসিনার পা-চাটা কূটনীতির কারণে বাংলাদেশকে বাঁধের মধ্যে আবদ্ধ করেছে। খুনি হাসিনা ছিল ভারত সরকারের দাবার গুটি। বাংলাদেশ হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়েছে, ভারতকেও লাল কার্ড দেখাবে। এদেশের মানুষ পাকিস্তানকে হার মানিয়েছে ভারতকেও ছাড় দিবে না। আমরা ভারতের বন্ধুত্ব চাই, প্রভুত্ব নয়। অবিলম্বে ভারতের দ্বিমুখী নীতি বন্ধ করতে হবে।

আরাফাত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, আমার বাড়ি ফেনী জেলায়। আমার জন্মের পর থেকে এরকম বন্যা কখনো দেখিনি, অথচ এই মুহূর্তে ফেনীতে আমার গর্ভবতী বোন বাসার ছাদে অবস্থান নিয়েছে। জুলাই বিপ্লবে ভারতীয় আধিপত্যের কবর রচিত হয়েছে। আমরা বৃটিশদের বিতাড়িত করেছি, পাকিস্তানকে হারিয়েছি, আওয়ামী ফ্যাসিবাদকেও হারিয়েছি, ভারতকেও পরাজিত করতে আমরা পিছপা হবো না।

ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নীতির আলোকে বাংলাদেশের সাথে আলোচনায় বসতে হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আমরা শান্তি চাই। নদীর পানি আমাদের অধিকার। আমরা ভারতের অসম চুক্তির সমাধান করে ন্যায্যতা ভিত্তিতে পানি বণ্টনের দাবি জানাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা বিনা ভোটের সরকার ছিল। ফ্যাসিস্টদের জনগণের সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। দিল্লিকে প্রভু বানিয়ে মসনদ টিকিয়ে রেখেছিলো। দিল্লি যেভাবে আধিপত্য করেছে সে দিন শেষ। এখন আমাদের ওপর প্রভুত্ব করার সুযোগ ভারতকে দেওয়া হবে না। 

দিল্লিকে বন্ধুত্বের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আপনাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। বন্ধুত্ব মানে প্রভুত্ব নয়, আমরা সমতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক করবো।  

এসময় তিনি বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনা ফেরত দেওয়া এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে করা সকল অসম চুক্তি বাতিলের দাবি জানান।

কেএইচ/পিএইচ