ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে নির্দলীয় কাউকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যদি বাইরের কাউকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে গেটলক কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। 

আজ (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি ও হুঁশিয়ারি প্রদান করেন। 

বিক্ষোভ মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে কলা ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ প্রদক্ষিণ করে ভাস্কর্য চত্বরে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভাড়াটিয়া ভিসি আসলে, গেটে তালা ঝুলবে,’ ‘জবি থেকে ভিসি চাই, দিতে হবে-দিতে হবে’ স্লোগান দেন।

এ সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন নির্দলীয় উপাচার্য দিতে হবে। সকল প্রকার ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে যিনি মেরুদণ্ড সোজা করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন, এ রকম উপাচার্য দিতে হবে। জবির বাইরে থেকে উপাচার্য এলে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। 

বহিরাগত উপাচার্যকে কোনো ধরনের সহযোগিতা না করারও ঘোষণা দেন তারা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, জবিতে এক ঝাঁক যোগ্য শিক্ষক সমাজ আছে, কিন্তু বারবার সেই শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন থেকে সকল উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ প্রশাসনিক পদে নিজস্ব শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। সকল শিক্ষক নিয়োগ জবি থেকে হতে হবে। আমরা আর ভাড়াটে ভিসি (উপাচার্য) চাই না, কোনো ভাড়াটে শিক্ষক-কর্মকর্তা চাই না। শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলতে সক্ষম, এ রকম যোগ্যতাসম্পন্ন নির্দলীয় ভিসি চাই। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সেকশন অফিসার পর্যন্ত সকল পদে জবি শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকদের মধ্য থেকে যদি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি নিয়োগ না দেওয়া হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট লক করে দেওয়া হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোনি বানাতে দেওয়া হবে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক নিরপেক্ষ, যোগ্য অধ্যাপক আছেন যারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার সক্ষমতা রাখেন।  

আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান সাদী বলেন, শিক্ষকদের শুধু বেতন দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলেছে। তারা কিছু নিয়ম কানুন দিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখন আমরা নিজেরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন করতে চাই। আমাদের নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা কালচার আছে, সেই কালচার ও নিয়মকানুনই চলবে। ঢাবির কালচার ও নিয়মকানুন দিয়ে জগন্নাথ আর চলবে না।

সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এমএল/এনএফ