জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হল উদ্ধারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাঠে নামতে চায় ঢাকা জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা জেলা প্রশাসনের কনফারেন্স রুমে জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন প্রশাসক মো. আনিসুর রহমান। 

জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা যে অভিযোগগুলো করেছেন তার ভেতরে হল উদ্ধার আমাদের জেলা প্রশাসনের একটি বড় দায়িত্ব। জেলা প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মিলে আমরা এক একটা করে হলের কাগজপত্র সরবরাহ করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে হল উদ্ধার করতে চাই। হল উদ্ধারে আমরা আগামীকাল থেকেই মাঠে নামতে চাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আমরা এ কাজটি করব।

আনিসুর রহমান আরো বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় হল দখল করে জাল দলিল করা হয়। এটার বিষয়ে আপত্তি দিলে হাইকোর্ট পর্যন্ত চলে যায়। এসব বিষয়ে সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে।

এদিন আরো দাবির বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এসএম মুন্না বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জগন্নাথের কোনো ছাত্র সংগঠনের পরিচয় দিয়ে কেউ যদি চাঁদাবাজি বা হল উদ্ধার আন্দোলনের নামে কোনো নাশকতা করতে চায় তার বিরুদ্ধে আশা করছি জেলা প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

পুরান ঢাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগ উল্লেখ করে শিক্ষার্থী মাকসুদুল হক বলেন, আগে আওয়ামী লীগ চাঁদাবাজি করতো। এখন বিএনপি করছে। তাদের বিষয়ে জেলা প্রশাসন কী ভূমিকা রাখবে। এছাড়া শ্যামবাজারে যে চাঁদাবাজি হয় সেখানে পুলিশ জড়িত। এছাড়া যারা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আছেন তারা পেনশনের টাকা পেতে অনেক ভোগান্তিতে পড়েন। এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের ভূমিকা আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেলো শিক্ষার্থীরা। অথচ গুলি করে কাউন্সিলর ছোটন অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া হোক। 

শাহিন আলম সান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, জেলা প্রশাসন বা থানায় থানায় নিরাপত্তা দিতে আমরা শিক্ষার্থী প্রয়োজন পড়লে থাকতে চায়। হাজী সেলিম গুলশান আরা হল দখল করে রেখেছে, সেটা ছাত্রদের দিতে হবে। এসময় শিক্ষার্থীরা রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল, সদরঘাটে টোলের নামে চাঁদাবাজি, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের দুর্বল ভূমিকাসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।

এসব দাবির বিষয়ে জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, সকলের যে অভিযোগ সেগুলো লিখিত আকারে আমরা মন্ত্রিপরিষদে পাঠাব। কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হলো এরজন্য ৫ জনের সমন্বয় প্রতিনিধির নাম দেবেন। আমরা প্রতি সপ্তাহে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হলো ব্রিফ করবো। সদরঘাটে টোল নেওয়া বা চাঁদাবাজির রুখতে দরকার হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমি যাব, বলেন জেলা প্রশাসক।

এসময় ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মমতাজ বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শিবলী সাদিকসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

এমএল/পিএইচ