সারাদেশে চলমান আওয়ামী লীগ ও তাদের দলীয় অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রোপাগাণ্ডা এবং অন্যান্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এতে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অংশ নেন।

সোমবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিল নিয়ে নগরীর তালাইমারি মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় রাজশাহীতে তিন শহীদসহ চারটি চত্বরের নাম পরিবর্তনের দাবি তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। এর মধ্যে বর্তমান আলুপট্টি মোড়টিকে শহীদ আলী রায়হান চত্বর, সাগরপাড়া মোড়টিকে শাকিল চত্বর, ভদ্রা মোড়টিকে সাকিব আনজুম চত্বর ও তালাইমারি মোড়টিকে বিজয় চব্বিশ চত্বর নাম রাখার দাবি করা হয়।

এ সময় ‘তোমার আমার জান নিতে, খুনি এখন দিল্লিতে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’,‘হৈ হৈ রৈ রৈ, শেখ হাসিনা গেলি কই’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই’,‘খেলা খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, গত ৫ আগস্ট সারা বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ স্বৈরাচার সরকারকে হটিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। এখন শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে বসে বাংলাদেশকে নিয়ে কলকাঠি নাড়ছেন। দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ যদি বিজয় অর্জন করতে পারে তেমনি অর্জিত বিজয়কে তারা রক্ষাও করতে পারবে। তাই খুনি হাসিনাকে বলতে চাই, কোনো ষড়যন্ত্র করেই লাভ হবে না। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে বাংলার ছাত্র সমাজ প্রস্তুত রয়েছে।

সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, এতো ছাত্রের রক্ত দেখেও  খুনি হাসিনা ঠাণ্ডা হয়নি। আপনি ভাববেন না আমরাও আপনার সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত রয়েছি। ছাত্র সমাজকে আপনার চেয়ে ভালো করে কেউ চিনে না। এখনো সময় আছে আপনি সতর্ক হয়ে যান। আমাদের বিজয় অর্জনকে ষড়যন্ত্র করে আপনি পার পাবেন না। আমরা লক্ষ্য করছি, আগামী ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক শোক দিবস পালন করার চেষ্টা করছে। ১৫ আগস্ট আমাদের শোক দিবস হতে পারে না, আমাদের শোক দিবস ৫ আগস্ট। আমরা এ দিবস পালন করতে কখনোই দেব না।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক বলেন, এত প্রাণের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের এ বিজয় ভারতে বসে বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে গণহত্যাকারী খুনি শেখ হাসিনা। শিক্ষার্থীরা যদি বিজয় অর্জন করতে পারে তেমনি অর্জিত বিজয়কে রক্ষাও করতে পারে। সেটি হয়তো শেখ হাসিনা জানেন না। শিক্ষার্থীদের এ বিজয়কে কোনো শক্তি বিনষ্ট করতে চাইলে তার জবাব শিক্ষার্থীরাই দেবে। গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে শেখ হাসিনার বিচার দাবি করছি। আমরা শিক্ষক সমাজ আগেও শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ।

বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
 
জুবায়ের জিসান/এএমকে