কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রুদ্র সেনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নাম ‘শহীদ রুদ্র তোরণ’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) জুমার নামাজের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের জন্য দোয়া শেষে শাবির একদল শিক্ষার্থী ৯ দফা দাবিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেন। পরবর্তীতে বিকেল ৩টার দিকে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রধান ফটকের নাম শহীদ রুদ্র তোরণ ঘোষণা দেন।

এর পর স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগের জন্য ছড়িয়ে পড়েন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবিপ্রবি শাখার সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, শহীদ রুদ্র সেনের স্মরণে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকের নাম ‘শহীদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা করছি। কাগজের এই লেখা যদি ছিড়ে ফেলা হয় আমরা আবারও রক্ত দিয়ে লিখে রেখে আসব। রুদ্র মরে গিয়েও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। সারা দেশের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।

তিনি আরও বলেন, যদি দ্রুত আমাদের ৯ দফা মেনে নেওয়া না হয়; যদি অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ না করা হয়; যদি ইন্টারনেট কানেকশন স্বাভাবিক না করা হয়; যদি ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে সন্ত্রাসমুক্ত না করা হয়; যদি হল, ক্যাম্পাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো টিয়ারশেল-গ্রেনেড-গুলি অব্যাহত থাকে, তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে।

আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, শহীদের রক্তের ওপর কোনো সংলাপ হবে না। পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মমভাবে সকল হত্যা (শহীদ), হামলা-নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তারের চূড়ান্ত ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও ছাত্রলীগের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা সুরমা আবাসিক এলাকার খাল পার হতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ হারান কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র সেন। তিনি দিনাজপুরের পাহাড়পুর এলাকার সুবীর সেনের একমাত্র ছেলে ছিলেন।

জুবায়েদুল হক রবিন/এমজেইউ