কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের সকল দাবি না মানায় প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তারা। প্রশাসন ভবনে কোনো ধরনের পানি বা খাবার ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। 

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবার জমা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বিকেল ৪টার দিকে প্রশাসন ভবনে খাবার ঢোকাতে চাইলে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, আমাদের দাবি না মেনে নেওয়া হলে আমরা অবরোধ ছাড়বো না। 

এদিকে পাঁচ দফা দাবির বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাবির সাত্তার। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের দুই তিনটি দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলেও ক্যাম্পাস থেকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা ও ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশনা বাতিলের বিষয়ে আপত্তি জানান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্তচিন্তার জায়গা। এখানে রাজনীতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক তবে ছাত্রদের দাবির বিষয়ে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। এছাড়াও সরকার থেকে আগামীকাল বাংলাদেশের সকল স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা আসছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে হল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। হল ত্যাগের নির্দেশনা বাতিল করতে হলে ইউজিসির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

উপাচার্যের এমন মন্তব্য শোনার পর শিক্ষার্থীরা ‘দালাল দালাল’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে স্বায়ত্তশাসিত, তাহলে কেন ইউজিসির জন্য প্রশাসনের অপেক্ষা করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে না হলে কোনো শিক্ষার্থী প্রশাসন ভবন ছাড়বে না।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা পাঁচটি দাবি করেন। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- গতকালের ঘোষিত ছুটি বাতিল করতে হবে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি হল সকল ধরনের ছাত্র রাজনীতিমুক্ত থাকতে হবে এবং দুপুর ২টার মধ্যে প্রতিটি হলের প্রতিটি কক্ষ সার্চ করে অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে, চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে যেন কোনো ধরনের মামলা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে, হলের সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে একদিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে তুলে দিতে হবে।

জুবায়ের জিসান/আরএআর