বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি ও মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষকরা। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এরপর তারা মৌন মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। আমি মনে করি বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মতিউর রহমান বলেন, একটি পাখিকেও একজন মানুষ এভাবে গুলি করে না যেভাবে গুলি করে শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে। আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, সারাদেশের শিক্ষক সমাজ যদি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতো তাহলে দেশ আজ এই অবস্থায় যেত না। শিক্ষকরা যখন মাথা নিচু করে চলতে শুরু করেছে, শিক্ষার্থীরা তখন পথ দেখিয়েছে। পুলিশ যেভাবে গুলি করেছে তাতে দেখতে হবে সরকারের নির্দেশ ছিল কি না যাকে পাও গুলি করো। যদি এটা না হয় তাহলে দেখতে হবে পুলিশ কেন অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করল?  আমরা এর বিচার চাই। আমি শিক্ষকদের বলবো আপনারা মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ান। তাহলে জাতির মেরুদণ্ড সোজা হবে।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বেরোবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন আবু সাঈদ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, আবু সাঈদ এই আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। এ কারণে মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি।

দুপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। তখন ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে শতাধিক টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। এই সংঘর্ষে মিছিলের সামনে থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়।

শিপন তালুকদার/আরএআর