ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কয়টি হল থেকে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ায় প্রতিটি হলেই মিছিল এবং মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে বিজয় উদযাপন করছেন কোটা আন্দোলনকারীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’, ‘শিক্ষা-ছাত্রলীগ, একসাথে চলে না’, ‘ছাত্রলীগ বিতাড়িত করো, সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ো’— এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বুধবার (১৭ জুলাই) সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ সর্বশেষ নিয়ন্ত্রণ হারায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে। এই হলের কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের রুম ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় নেতারা বের হয়ে যান।

এর আগে গতকাল রাত ১২টা থেকে রোকেয়া হল থেকে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। ছাত্রলীগের নেত্রীদের মারধর করে বের করে দিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টকে দিয়ে হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করান। এরপর একের পর এক মেয়েদের শামসুন নাহার হল, বঙ্গমাতা হল, কুয়েত মৈত্রী হল এবং বেগম সুফিয়া কামাল হলও নিয়ন্ত্রণে নেয় সাধারণ ছাত্রীরা এবং নিষিদ্ধ করা হয় হল ছাত্র রাজনীতি।

রাত ২টার দিকে ছেলেদের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল থেকে শুরু করে পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হল, জিয়া হল, মুহসিন হল, স্যার এ এফ রহমান হলসহ সব হল থেকে পালিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতারা। ছেলেদের জহুরুল হক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হন প্রভোস্ট।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সবশেষে ঢাবির এফ রহমান হলও সাধারণ শিক্ষার্থীরা দখলে নেন। এসময় হলটিতে থাকা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের রুম ভাংচুর করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাবি ক্যাম্পাসে সেই সাদ্দাম এখন পলাতক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এফ রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাস মুক্ত হলো। নতুন ইতিহাস রচিত হলো। এমন দিন এক জনমে একবারই আসে। আমরা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের বলবো কেউ হল ছেড়ে যাবেন না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল ইউনিয়ন করে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে হল পরিচালনা করবো।

তিনি বলেন, আমাদের প্রায় অধিকাংশ শিক্ষকই রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চান। তারা আমাদের সঙ্গে আছেন। আমরা ক্যান্টিন খোলা রাখবো। মেস চালু থাকবে। দোকান খোলা থাকবে। হল খোলা থাকবে। আজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত স্বাধীন। কাপুরুষের ন্যায় গর্তে লুকাবেন না।

টিআই/এমএসএ