সংগৃহীত

বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন ও হলে সিট বাণিজ্য করে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। এবার সাম্প্রতিক কোটাবিরোধী আন্দোলনের জেরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আক্রমণের ভয়ে আলোচিত এই দুই নেত্রী হল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আক্রমণের ভয়ে গভীর রাতে হল থেকে বের যান তারা। তবে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা দাবি করেছেন— তিনি হলেই ছিলেন না। তিনি একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে ছিলেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত ৩টার দিকে দুই নেত্রী হল থেকে বের হয়ে যান বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। 

এদিকে গত রাতে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনসহ ৯ ছাত্রলীগ নেত্রীকে হল থেকে বের করে দেন কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে ঢাবির আরও কয়েকটি হল থেকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের বের করে দেওয়া হয়। এসব ঘটনা শোনার পর ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তারা হল থেকে বের হয়ে যান।

সর্বপ্রথম রোকেয়া হলকে সব ধরনের রাজনীতিমুক্ত হল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া, এই হল থেকে ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থী বের করে দেন।

রাত ১১টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ১০টায় প্রবেশের শেষ সময় থাকলেও ছাত্রলীগের নেত্রীরা নির্ধারিত সময়ের পরে হলে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মারমুখী হয়ে গেলে হাউস টিউটররা তাদের প্রটোকল দিয়ে কক্ষে পৌঁছে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের মারধর করে কক্ষ থেকে বের করে দেন।

বের করে দেওয়া ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর মধ্যে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইন, বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, সামিহা মাহবুব, সাজিয়া রহমান, বিপর্ণা রায় ও সাইফুন্নেসা ইলমিসহ অন্যরা ছিলেন।

নেত্রীদের হল থেকে বের করে দিয়ে প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে একটি লিখিত নেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে বলা হয়, আমরা রোকেয়া হলের মেয়েরা এই মর্মে লিখিত নিচ্ছি যে, আজ থেকে রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবদল, জাসদ, শিবির ইত্যাদি) নিষিদ্ধ করা হলো। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল রুম বা গণরুম থাকবে না। কোনো পলিটিক্যাল প্রোগ্রাম হলে হবে না। কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা হলের সঙ্গে থাকবে না। আমরা হলের মেয়েরা যদি ওইসব দলের দ্বারা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তাহলে হল প্রশাসন ও হল প্রভোস্টকে এর দায় নিতে হবে। আজ থেকে রোকেয়া হলকে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করা হলো।

এরপর সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শামসুন নাহার হল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ও জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ নিজ নিজ হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে অঙ্গীকারনামা দেন।

এমএসআই/এমজে