মধ্যরাতে স্লোগানে উত্তাল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে উত্তাল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক বক্তব্যের জেরে নতুন মাত্রা পেয়েছে চলমান এ আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং হলগুলোতেও উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করছেন। দিয়েছেন বিক্ষোভের ডাক। একই অবস্থা দেখা গেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কাছ থেকে জানা যায়, রাত ১১টার পর থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে স্লোগান দিতে শুরু করেন ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল এবং নারী ছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত শেখ হাসিনা হল থেকে ভেসে আসে স্লোগানের শব্দ।
বিজ্ঞাপন
‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’, ‘কীসের তোমার অধিকার, তুমি একটা রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত ছিল ক্যাম্পাসের হলগুলো। রাত ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের মূল গেটে মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাইফুল বলেন, ‘সরকার এখন পর্যন্ত মোটেই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়নি। একটি বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের ঢালাওভাবে রাজাকারের নাতি-নাতনি বলে সম্বোধন করেছেন। একটা ঘৃণিত শব্দ এখন অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবি করছি।’
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্রিক এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে? এটা আমার দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন। তাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার ফেলে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, দিন-রাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি পেরিয়ে, ঝড়-বৃষ্টি মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে এ দেশে বিজয় এনে দিয়েছিল; বিজয় এনে দিয়েছিল বলেই তো আজ সবাই উচ্চপদে আসীন। আজ গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পারছে। তা না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে থাকতে হতো।’
উল্লেখ্য, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে দিনদুয়েক আগে পুলিশের টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জের সামনে পড়তে হয়েছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। পরে এর প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জেএ/কেএ