চাকরিতে কোটা পুর্নবহালের প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথকস্থানে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।

রোববার (৭ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক এবং ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে। টানা পঞ্চম দিনের মত এই কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পরে বরিশাল-কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের যান চলাচল। ভোগান্তিতে পরে দূর পাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটের গাড়ির যাত্রীরা। থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যেও শিক্ষার্থীরা কাফনের কাপড় পরে সড়কে অবস্থান চালিয়ে যায়। কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও স্লোগান দিতে থাকে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নুসরাত বলেন, মেধার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে রাষ্ট্র নাগরিকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধারে প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আমৃত্যু। এই আন্দোলনেও অনক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রয়েছেন। আমাদের একটাই দাবি, কোনো বরাদ্দ কোটায় নয় মেধায় চাকরি হবে।

শিক্ষার্থী সুজয় বলেন, একটি দেশের ৫৬ শতাংশ কোটায় চাকরি পৃথিবীর কোথাও হয় না। কোটা পদ্ধতি বহাল রেখে শিক্ষিত মেধাবী যুবকদের কটাক্ষ করছে সরকার। আমরা এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন চালিয়ে যাব।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, চাকরি মেধার ভিত্তিতে হবে। এখানে কোটা বহাল স্পষ্ট বৈষম্য। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।

আন্দোলনকারীরা ঘোষিত ৪ দফা বাস্তবায়ন না হলে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলে হুঁশিয়ারি জানান।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবদুল কাইউম বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। সড়কে চলাচলকারীদের যেন দুর্ভোগ না হয় সে বিষয়টা গুরুত্ব দিতে শিক্ষার্থীদের বলা করা হচ্ছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ করেছে। তাদের সাথে আমরা কথা বলছি সড়ক ছাড়ার জন্য। তারা বলেছেন সড়ক ছাড়বেন। তবে এখনো সড়কে রয়েছেন। দ্রুতই হয়তো ক্যাম্পাসে ফিরে যাবে।

উল্লেখ্য, ৫ জুন সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল হয়। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন। এর প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে