চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকা এবং ফেসবুকে কোটা আন্দোলন নিয়ে পোস্ট করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন ওই বিভাগের মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের শিক্ষক নেতা অধ্যাপক ড. আ.ক.ম জামাল উদ্দিন। 

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ডিবেটিং ক্লাবের মেসেঞ্জার গ্রুপে সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাঈনকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সারাফ আফ্রো মৌকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জানা গেছে, চলমান কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন সমাজবিজ্ঞান ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাঈন। এ নিয়েই ক্ষুব্ধ হয়েই তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেন ক্লাবের মডারেটর আ.ক.ম জামাল উদ্দিন।

ক্লাবের মেসেঞ্জার গ্রুপে আ.ক.ম জামালের বলা কিছু স্ক্রিনশট ঢাকা পোস্টের হাতে এসেছে। সেখানে তিনি বলেন, ‌‘বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের পদ হতে মোশররফকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। নতুন সাধারণ সম্পাদক সারাফ আফ্রা মৌ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ডিবেটিং সোসাইটির কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। সবাইকে সভাপতি ফারজানা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হলো।’

তিনি বলেন, ‘যারাই সমাজবিজ্ঞান বিভাগে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তারা কখনই ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বজনীন কমিটিসমূহের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। ক্লাস ক্যাপ্টেনসহ এ জাতীয় কোনো ধরনের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না।’

কোটা আন্দোলনে যুক্ত থাকার ফলে কেউ কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিভাগ সহযোগিতা করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা বাইরের ঘটনাকে নিয়ে বিভাগের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের কারণ হবে, তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতেও এগুলো মোকাবিলা করা হয়েছে, এবারও মোকাবিলা করা হবে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আদালত অবমাননা কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে কেউ যদি মামলা হামলা গ্রেপ্তার হয়ে শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হন, তখন কোনো শিক্ষক বা বিভাগের তরফ থেকে সহযোগিতা আসবে না।’

এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন বলেন, ‘আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এবং ফেসবুকে কোটা আন্দোলন নিয়ে পোস্ট করায় আমাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ৷এই সংগঠনের মডারেটর ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন এক তরফাভাবে কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আদালত অবমাননার দায়ে মামলা দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন ৷

তিনি বলেন, আমি এসব হুমকি এবং বহিষ্কার আদেশের কারণে একটুও ভীত নই ৷ আমি এবং আমরা সহযোদ্ধারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলন চালিয়ে যাব ৷

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে শিক্ষক নেতা অধ্যাপক ড. আ.ক.ম জামাল উদ্দিনের ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কেএইচ/এসকেডি