শেখ মাজেদুল হক

দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানির মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে নাতি-নাতনিকে সুবিধা দেওয়া অযৌক্তিক বলে মনে করেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক। তিনি মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিনির্মাণের দাবি জানান।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শেখ মাজেদুল হক তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তার মতামত তুলে ধরেন।

তিনি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমার মরহুম বাবা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। উনি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন দেশের স্বাধীনতার জন্য। তার বিনিময়ে আমার সন্তানকে সুবিধা দেওয়াটা অযৌক্তিক। ৫৩ বছর বয়সী বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে...’

তিনি যখন এ পোস্ট করেন তখন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি বাতিল করার জন্য আন্দোলন করছেন। শিক্ষার্থীরা তার পোস্টে কৃতজ্ঞতা জানান এবং তার দেওয়া পোস্ট শেয়ার করতে থাকেন।

ইমরানুল হাসান ইমন নামের এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘আপনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সময়ের একজন সাহসী শিক্ষক।’

বেরোবির মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হকের দেওয়া ফেসবুক পোস্ট

 

জাহিরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘এ সময়ের যৌক্তিক কথা বলেছেন স্যার। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অবিরাম।’

শাহীন আল মামুন নামের আরেক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘শ্রেষ্ঠ সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কাছে আমরা এই আশা করি।’

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কোটা প্রথা বাতিল চাই না, তবে সংস্কার চাই। আমি চাই বর্তমানে যে ৫৬ শতাংশ কোটা রয়েছে তা কমিয়ে এনে সহনীয় পর্যায়ে আনা হোক।

প্রসঙ্গত, সারা দেশে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

উল্লেখ্য, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

শিপন তালুকদার/এমজেইউ