সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল থাকায় হাটহাজারী-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘এ দেশের শিক্ষা ও চাকরি কারও বাপ-দাদার উত্তরাধিকার নয়!’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধার বিকাশ জারি থাক’, ‘বাপ-দাদারা অস্ত্র ধরলে, কলম ধরতে ভয় কীসের বন্ধু?’, ‘বলো রাষ্ট্র তুমি কার? কোটার না মেধার?’ ইত্যাদি প্লেকার্ড দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষিত যুবকের অভাব নেই কিন্তু তারপরও এই কোটার মাধ্যমে চাকরি দিয়ে শিক্ষিত বেকার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অযোগ্যরা চাকরি নিচ্ছে। এটা আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। ফলে শিক্ষার্থীরা আগামীতে পড়াশোনায় আগ্রহী হবে না। আমরা এমন দেশ চাই না। এজন্য আগামীতে শিক্ষিত সমাজ গড়তে কোটা প্রথার বিলুপ্ত চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল সাম্য ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু সরকারি চাকরিতে কোটার ফলে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেধা থাকার পরও যোগ্য চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মূলত আমরা সকল প্রকার বৈষম্যমূলক কোটা প্রত্যাহার করার জন্য এই আন্দোলন করে যাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে গত চার দিন ধরে টানা আন্দোলন করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে তারা চার দফা দাবি জানিয়ে আসছে। দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে;  ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে;  সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এমজেইউ