২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা আরিচা-মহাসড়কের উভয়ই পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকেল সোয়া ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবরোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

পরে বিকেল পৌনে ৫টার শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে মহাসড়কে অবরোধকালে ঢাকাগামী সড়কে গাড়িসহ আটকা পড়েন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজননকেন্দ্রের (ডেইরি ফার্ম) মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্য চলে যান।

হেমায়েতপুর থেকে বাইপাইলগামী একটি বাসের যাত্রী বিল্লাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাসে বসেছিলাম। কিন্তু বাস ছাড়ার কোনো নাম নেই। বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পর্যন্ত হেঁটে এসেছি। বাকি পথ হেঁটেই যেতে হবে। যত আন্দোলনই হোক না কেন, দিনশেষে ভোগান্তিটা আমাদের সাধারণ জনগণের।

আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এতে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়ন করি। তবে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে আসায় এখন যান চলাচল স্বাভাবিক।

এর আগে, বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। পরে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

মেহেরব হোসেন/এমজেইউ