সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। টানা তৃতীয় দিনের মতো এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে মহাসড়কে যান চলাচল। ভোগান্তিতে পড়েন দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটের গাড়ির যাত্রীরা। বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলে এই অবরোধ কর্মসূচি। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা কাফনের কাপড় পরে সড়কে অবস্থান নেন। এছাড়াও কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

ঢাকাগামী একটি পরিবহনের যাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে সারাদেশের মানুষের সমর্থন আছে। শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করে সড়ক অবরোধ করায় আজকে আমরা অনেক ভোগান্তির মধ্যে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব জাতীয় সড়ক না আটকে বিকল্প উপায়ে আন্দোলন করার।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ইফতি বলেন, মেধার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে রাষ্ট্র নাগরিকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধারে প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আমৃত্যু। এই আন্দোলনেও অনেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রয়েছেন। আমাদের একটাই দাবি, কোনো বরাদ্দ কোটায় নয় মেধায় চাকরি হবে।

শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। আর তার বাংলায় বৈষম্য করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে। এই সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না। শুধুমাত্র আদিবাসী ও প্রতিবন্ধী কোটা থাকতে পারে। এছাড়া আর কোনো কোটা বহাল রাখা যাবে না। একটি দেশের ৫৬ শতাংশ কোটায় চাকরি পৃথিবীর কোথাও হয় না। কোটা পদ্ধতি বহাল রেখে শিক্ষিত মেধাবী যুবকদের কটাক্ষ করছে সরকার।  আমরা এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

আন্দোলনকারীরা ঘোষিত চার দফা বাস্তবায়ন না হলে ধারাবাহিক কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবদুল কাইউম বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ের জন্য সড়ক ছাড়তে সম্মত হচ্ছিল না। দফায় দফায় চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে উপাচার্য স্যার নিজে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পর সড়ক ছেড়েছে শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল হয়েছে। এর প্রতিবাদে গত সোমবার (১ জুলাই) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর