ত্রিমুখী আন্দোলনে অচল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ত্রিমুখী আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম। বন্ধ রয়েছে শিক্ষার্থীদের সব একাডেমিক ক্লাস ও পরীক্ষা। এমনকি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে বন্ধ রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি।
গতকাল সোমবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিমুখী এ আন্দোলনের সূচনা হয়। মঙ্গলবারও এ কর্মসূচি চলছে। কবে নাগাদ এটির অবসান হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। শিক্ষার্থীরা কবে ক্লাসে ফিরবেন, কবে শুরু হবে বন্ধ হয়ে যাওয়া পরীক্ষাগুলো— তা বলার উপায় নেই। তবে, সরকার যদি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিকৃত ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহার করে তবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার স্বাভাবিক পাঠদান ও পরীক্ষা শুরু হবে। তবে, শিক্ষার্থীরা হয়তো কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে মাঠে আন্দোলনরত থাকবেন।
বিজ্ঞাপন
সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এর ধারাবাহিকতায় ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেন ঢাবি শিক্ষকরা। এরপর ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিন দিন ঢাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। গত ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয়।
সরকার ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহার না করায় সোমবার (১ জুলাই) থেকে ঢাবিতে পূর্বঘোষিত সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এতে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও কর্মবিরতি শুরু করে। এ দিন সকাল থেকে সবধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন ঢাবি শিক্ষকরা। এ ছাড়া ৩০ জুন পৃথক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব ক্লাস ও পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকেই শিক্ষকরা ঢাবির কলা ভবনের সামনের গেটে অবস্থান নেন। বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। তবে, শিক্ষকদের এ আন্দোলন পরিস্থিতি বিবেচনা করে যথা সময়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, কত টাকা বেতন-বোনাস পাই, আমরা সেটি কখনও হিসাব করি না। তাহলে কোন হিসাবে আমাদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন? কোন হিসাবে আমাদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ থেকে ৫৯ করার চিন্তা করেন? কোন হিসাবে আমাদের নমিনি (মনোনীত ব্যক্তি) নির্বাচনের ক্ষেত্র সংকুচিত করেন? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। না হলে এ পেনশন স্কিম কখনও সর্বজনীন হবে না। আজ এই সর্বাত্মক আন্দোলন শুধু আমাদের জন্য নয়, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য, আগামী প্রজন্মের জন্য, শিক্ষাব্যবস্থার জন্য, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য। তাই কোনো শক্তিই এ আন্দোলন থেকে আমাদের সরিয়ে দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে আজ (সোমবার) থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছি। আমরা সরকারের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছি। বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি। এ দাবিগুলো মানার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থামাব না।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
এদিকে, হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিল চেয়ে বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।
এর আগে, ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল ‘যথাযথ’ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
তবে, হাইকোর্টের এ রায় প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে সে দিন বিকেলে আন্দোলন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরের দিনও একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। এরপর গ্রীষ্মকালীন ও ঈদুল আযহার ছুটি শেষ হওয়ার পরের দিন থেকে কোটা পুনর্বহাল বাতিলের দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে বন্ধ থাকা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির গেটে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনকে সাধুবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তারা। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
তবে, উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি খুলে দেওয়ার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান।
শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবি
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহাল-সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শারজিস ইসলাম বলেন, আমাদের আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নয়। তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। বাংলাদেশ গঠনে তারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের অবদান আমরা অস্বীকার করি না। কিন্তু তাদের সন্তান, উত্তরসূরিরা বৈষম্যমূলকভাবে সুবিধা ভোগ করবেন— এটা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি বংশানুক্রমিক নয়। সাংবিধানিকভাবে প্রত্যেক নাগরিকের সমান সুযোগ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজও আমাদের বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতেও পোষ্য কোটা দেওয়া হয়েছে। এ পোষ্য কোটার ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। একটি পরিবারের একজন যেখানে চাকরিতে রয়েছেন সেখানে অন্যদেরও সেই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অথচ আমার-আপনার বাবা-মা যারা শ্রমজীবী, কৃষক, কর্মজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, স্বাধীন এই বাংলায় কোটা বৈষম্যের কোনো স্থান নেই।
ঢাবি শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একযোগে আন্দোলন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আগামী ২ থেকে ৪ জুলাই আমাদের কর্মসূচি থাকবে। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে আমাদের গণপদযাত্রা শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি
অন্যদিকে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতির পর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ৩০ জুন থেকে তারা পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেন। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম থেকেও তারা বিরত ছিলেন। গতকাল সোমবার তারা শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং কর্মবিরতি পালন করেন। তবে, মঙ্গলবার কোনো অবস্থান কর্মসূচিতে যাননি তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ সম্মিলিতভাবে এ কর্মবিরতিতে অংশ নেয়।
কর্মচারীদের এ আন্দোলনের ফলে ৩০ জুন থেকেই বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন। সরেজমিনে গিয়েও এ চিত্র লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া সব বিভাগের কার্যক্রমও তারা বন্ধ করে দেন। হলেও কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করতে আসেননি। এমনকি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারেরও। মেডিকেল সেন্টারের হোমিওপ্যাথি বিভাগে সেবা না পেয়ে ফেরত আসার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসকও সেবা প্রদানে অস্বীকৃতি জানান বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তবে, চক্ষু ও দন্ত বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে সেবা প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে সহকারী মেডিকেল অফিসার হালিমা সাদিয়া বলেন, কর্মবিরতির কারণে সেবা দিচ্ছেন না তারা। কর্মবিরতি শেষ হলে সেবা পাওয়া যাবে।
পরিষদের নেতারা বলেন, আমরা এ বৈষম্যমূলক প্রত্যয় স্কিম বাতিল চাই। আমাদের ওপর জুলুম হিসেবে এ প্রত্যয় স্কিম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. আব্দুল মোত্তালিব বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হলে টয়লেট পরিষ্কার করার জন্যও কেউ থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হবে। পানি থাকবে না, বিদ্যুৎ থাকবে না, টয়লেট পরিষ্কার বা ময়লা পরিষ্কার করারও কেউ থাকবে না। গাড়ি চলবে না, অফিস চলবে না, কোনো কিছুই চলবে না, সব বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা আমাদের পেট বাঁচানোর তাগিদে এগুলো করতে বাধ্য হব।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব
ত্রিমুখী এ আন্দোলনের ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর। একদিকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে ভেবে তারা ক্যাম্পাসে চলে এসেছিলেন। তবে, হঠাৎ এ আন্দোলনে সব স্থবির হয়ে যাওয়ায় তারা আবার বাড়িতেও ফিরতে পারছেন না। আন্দোলন কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়েও সন্দিহান তারা। অন্যদিকে, লাইব্রেরি বন্ধ করে দেওয়ায় পড়াশোনার সুযোগও সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মঙ্গলবার পরীক্ষা হবে ভেবে বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে এসেছি। তবে, হঠাৎ এ আন্দোলনে ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেল। কবে খুলবে তা-ও জানি না। এখন না পারছি বাড়ি চলে যেতে, না পারছি থাকতে। লাইব্রেরিও বন্ধ করে দেওয়া হলো।
‘পড়াশোনা করে লাভ কী? যেখানে ৫৬ শতাংশ কোটাধারীরাই পড়াশোনা না করে চাকরি পেয়ে যাবেন! যদি এইচএসসি শেষে কোনো কাজে ঢুকতাম বা বিদেশে চলে যেতাম, এত দিনে ফ্যামিলি চালানোর সামর্থ্য তৈরি হতো। তাই আজ কোটা আন্দোলনে যোগ দিয়েছি নিজের অধিকার আদায়ের জন্য।’
সার্বিক বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, কর্মবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে নাকি অল্প দিনের মধ্যে শেষ হবে, সেটি এখনও বলা যাচ্ছে না। তা-ই কবে থেকে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হবে এখনই বলা যাচ্ছে না।
কেএইচ/এমএআর