ভুক্তভোগী তৌফিকুর রহমান (বামে) ও অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল বায়জিদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় দেখে পরিচয় জানতে চাওয়ায় কথা কাটাকাটির জেরে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে গেছে।

শনিবার (৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দ্য সূর্যসেন হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীকে প্রথমে ঢাবির শহীদ মোর্তজা মেডিকেলে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এসময় তার মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের মাস্টার দ্য সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল বায়জিদ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় বাসের আড়ালে আবদুল্লাহ আল বায়জিদকে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন তৌফিকুর রহমান। বিষয়টি দৃষ্টিকটু মনে হওয়ায় বায়জিদের কাছে পরিচয় জানতে চান তৌফিক। এসময় তৌফিকের সঙ্গে বায়জিদ খারাপ ব্যবহার করেন ও গালাগাল করেন। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে বায়জিদ সূর্যসেন হল গেটের সামনে ইট দিয়ে তৌফিকের মাথায় আঘাত করেন। এতে তার মাথা ফেটে যায়।

তবে ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আবদুল্লাহ আল বায়জিদ। তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আহত শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান বলেন, তারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন অশ্লীল কর্মকাণ্ড করছিল। আমি কোচিং করিয়ে আসছিলাম, খুব ক্লান্ত ছিলাম। তাদের অশ্লীল কার্যক্রম দেখে আমি শুধু পরিচয় জানতে চেয়েছি। সে কোনো অপরাধ ছাড়াই আমার মা-বাবা তুলে গালি দিয়েছে, আমার হলের সামনে আমার মাথায় ইট দিয়ে জখম করেছে। এরপর আমার কী হয়েছে আমি জানি না। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতি মোতাবেক তাকে যেন হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুল্লাহ আল বায়জিদ বলেন, আমি আমার বান্ধবীর সঙ্গে আইইআর ইনস্টিটিউটের সামনে হাঁটছিলাম। আমরা আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম, কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এসময় হুট করে সে আমার পরিচয় জানতে চায়। একপর্যায়ে সে আমাকে হুমকি দেয় এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, পরে আমি সূর্যসেন হলের কাছে পৌঁছালে ৪-৫ জন শিক্ষার্থী এসে আমাকে মারতে শুরু করে। তাদের হাতে ইট ছিল, যা সিসিটিভি দেখলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। মারামারির একপর্যায়ে আমার কনুইয়ের ধাক্কা বা কোনো কারণে তার মাথা ফেটে যায়। আমার হাতে ইটও ছিল না।

বায়জিদ বলেন, পরে ঘটনা মিটমাট করতে সূর্যসেন হল ক্যাফেটেরিয়ায় বসলে সেখানে ২০/২৫ জন জুনিয়র শিক্ষার্থী দিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। এসময় আমার সঙ্গে আমার কয়েকজন বন্ধুবান্ধব ছিল। এখানেও আমাকে মারধর করা হয়েছে। এখানে আমি ভুক্তভোগী কিন্তু আমাকে অপরাধী বানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো মাকসুদুর রহমান বলেন, আমি ঘটনা জেনেছি। আগামীকাল (রোববার) বিকেল ৩টায় দুজনকে অফিসে ডাকা হয়েছে।

কেএইচ/এসএসএইচ