কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে চবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
দেশের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধনটি আয়োজন করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘বৈষম্যমূলক কোটা প্রত্যাহার চাই’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি প্লেকার্ড দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
মানববন্ধনে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-নাতনিরাও কোটার সুবিধা ভোগ করছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নারীদের কোটার আধিক্য রয়েছে। এ ছাড়া রেলওয়েতেও বিভিন্ন কোটা রয়েছে। তাহলে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-নাতনি এবং নারী না হয়ে কি ভুল করেছি? আমরা শুধু যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ চেয়েছি। কোটা পদ্ধতি পুনরায় চালু হলে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরা সরকারি চাকরিতে স্থান পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহিজুল ইসলাম বলেন, আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাই, তারা দেশের সূর্য সন্তান। কিন্তু তাই বলে তাদের সন্তান এমনকি নাতি-নাতনিরাও পরিশ্রম কম করে কোটার ভিত্তিতে চাকরিতে যোগদান করবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা কোনো দেশের স্বাভাবিক শিক্ষাব্যবস্থা হতে পারে না।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মাশরুর আহমেদ বলেন, দেশের বিপুলসংখ্যক বেকার থাকা সত্ত্বেও কোটার মতো বৈষম্যমূলক নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। এখন বেকারের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। আর আমরা এখানে কোনো সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে আসেনি, আমরা শুধু আমাদের অধিকার আদায়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। হাইকোর্টের প্রতি সম্মান রেখে আমরা বলতে চাই, হাইকোর্ট যেন মুক্তিযোদ্ধা কোটার পুনর্বহাল রুল বাতিল করেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আতিকুর রহমান/এএএ